বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইবার হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি–৭–এর নেতারা। আজ রোববার জোটের শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার মাটিতে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের ঘটনা তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন জোটের নেতারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে জি–৭–এর নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন শেষে ওই বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘নিজের মাটিতে রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের দ্রুত তদন্ত এবং এই অস্ত্র ব্যবহারের বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যার দাবি জানাচ্ছি আমরা। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ, সংবাদমাধ্যমের ওপর পদ্ধতিগত দমন–পীড়ন বন্ধ এবং এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত ও শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। রাশিয়া থেকে চালানো সাইবার হামলা ও অন্যান্য সাইবার অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনারও জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ জ্বালানি সরবরাহের পাইপলাইন কলোনিয়াল পাইপলাইনসহ একাধিক স্থানে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে এসব হামলার জন্য মস্কোকে অভিযুক্ত করে যুক্তরাজ্য। দেশটির অভিযোগ, এসব হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে রাশিয়া।
অনেক সাইবার হামলা হচ্ছে মুক্তিপণের জন্য। প্রথমে হামলাকারীরা সাইবার হামলা চালিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডেটা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং সেগুলো ফিরিয়ে দিতে মুক্তিপণ দাবি করে। এই হামলা ‘র্যানসমওয়্যার অ্যাটাক’ নামেও পরিচিত।
গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক দেশটির বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির ওপর রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা হয়। পরে জার্মানিতে চিকিৎসা নেন তিনি। ওই সময় জার্মানির সরকারসহ বিভিন্ন দেশ জানায়, রাশিয়ায় তৈরি নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছে নাভালনির ওপর। এই হামলার পেছনে রুশ সরকার জড়িত বলেও দাবি করে দেশগুলো। কিন্তু রাশিয়ার সরকার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত শুক্রবার থেকে আজ রোববার পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী জি–৭ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা কর্নওয়ালের কারবিস বেতে জোটের এই শীর্ষ সম্মেলন হয়। এর আগে নতুন মহামারি ঠেকাতে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয় এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে। কারবিস বে ডিক্লারেশন অন হেলথ নামের এই পরিকল্পনায় রয়েছে রোগনির্ণয়, চিকিৎসা এবং টিকা উদ্ভাবন ও অনুমোদনের সময়সীমা ১০০ দিনের মধ্যে নামিয়ে আনা, সম্ভাব্য সংক্রামক রোগের আবির্ভাবের ওপর নজরদারির জন্য বৈশ্বিক নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সক্ষমতা বাড়ানো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংস্কার এবং তাকে শক্তিশালী করা। ঘোষণাপত্রে সংক্রামক রোগের ওপর নজরদারির এই ব্যবস্থাকে ‘প্যানডেমিক রাডার’ বলে অভিহিত করা হয়।