জলবায়ু বিপর্যয়
সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে গরিব দেশগুলো
বিশ্বের সবচেয়ে গরিব ৩৪টি দেশ দেনা শোধ করতে ২ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার ব্যয় করছে।
একই সময়ে জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় তারা মাত্র ৫৪০ কোটি ডলার ব্যয় করতে পারছে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারছে না গরিব দেশগুলো। এর বিপরীতে বিভিন্ন খাতের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধে তাদের পাঁচ গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশ্বের ৩৪টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইন এ দাবি করেছে। গতকাল বুধবার গার্ডিয়ান–এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করছে জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইন। সংস্থাটি বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে গরিব ৩৪টি দেশ ২ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার দেনা শোধ করছে। এর বিপরীতে জলবায়ুর পরিবর্তন ও এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় তারা মাত্র ৫৪০ কোটি ডলার ব্যয় করতে পারছে।
নিম্ন আয়ের দেশগুলো এখন আর্থিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে নেওয়া ১০০ কোটির বেশি ডলার ঋণ শোধ করছে।
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উগান্ডা জলবায়ু সংকট কাটাতে ব্যয় করেছে মাত্র ৫৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এই অর্থের একটা অংশ ছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া। অথচ ১০ কোটি ৭৪ লাখ ডলার বাজেট থেকে কাটছাঁটের পরও চলতি বছর তারা ঋণ শোধ করবে ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। ২০২৫ সালে এটা বেড়ে দাঁড়াবে ১৩৫ কোটি ডলার। দেশটিকে আগামী চার বছর তাদের ঋণের সুদ মেটাতেও বাড়তি অর্থ জোগাড় করতে হবে।
জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইন বলছে, গরিব দেশগুলোকে ধনী দেশগুলোর তুলনায় ঋণের ওপর বেশি সুদও দিতে হয়। ধনী দেশগুলোকে যেখানে দেড় থেকে আড়াই শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়, গরিব দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ হার ১০ শতাংশের বেশি।
জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইনের নির্বাহী পরিচালক হেইডি চাও বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলো এখন বিভিন্ন ধনী দেশ, ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে নেওয়া ১০০ কোটির বেশি ডলারের ঋণ শোধ করছে। অথচ এখন তাদের জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার। তিনি জানান, আগামী রোববার শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬-এ গরিব দেশগুলো বিষয়টি তুলে ধরবে।
এদিকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনের আগমুহূর্তে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, বর্তমান প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যে হারে কার্বন নিঃসরণ কমানো হবে, তাতে চলতি শতকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা গড়ে ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএসইপি) গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই সতর্কতা দেয় বলে রয়টার্স জানায়।