দক্ষিণ আফ্রিকায় বন্যায় ৩৪১ জনের প্রাণহানি
দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় একটি প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ৩৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে এ বন্যা শুরু হয়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। আজ শুক্রবার আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের প্রধান সিহলে জিকালালা বলেন, বন্যায় ৪০ হাজার ৭২৩ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৩৪১ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে, যা দুঃখজনক।
প্রাদেশিক প্রধান আরও বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আমরা নিশ্চিত করতে পারি। হিসাব এখনো চলছে। ক্ষয়ক্ষতি কয়েক বিলিয়ন র্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা) ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই বন্যা এই প্রদেশ এবং সম্ভবত আমাদের দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন দুর্যোগ সৃষ্টি করেছে।’
সপ্তাহান্তে টানা বর্ষণ ও গত সোমবার অতি ভারী বর্ষণে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়, রাস্তাঘাট ও সেতু ধসে যায়। দেশটির অন্যতম ব্যস্ত বন্দরে পণ্য ওঠানামা বিঘ্নিত হয়। পণ্যবাহী কনটেইনার ভেসে যায় এবং কিছু এলাকায় সেগুলো লুটও হয়। পরে বুধবার ওই প্রদেশকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হয়।
ইসিফিঙ্গোর অস্থায়ী বসতির বাসিন্দা সোমি মালিজোল পানিতে ভেসে যাওয়া তাঁর ঝুপড়ি ঘরের জিনিসপত্র খুঁজছিলেন। তিনি বলেন, ‘খারাপ, খারাপ অবস্থা। আমাদের আর অবশিষ্ট কিছু নেই। এমনকি আমার ঘুমানোর জন্যও কিছু নেই।’
বন্যায় বিদ্যুৎসহ পৌর পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া পাইপ ও পানির ট্যাংক থেকে পরিষ্কার পানি সংগ্রহে বাসিন্দাদের গতকাল বৃহস্পতিবার হুড়োহুড়ি করতে দেখা গেছে। ভারী বর্ষণের বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক করা হয়নি জানিয়ে থাবিসিলে মাথুম্বু নামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। এভাবে বেঁচে থাকা কঠিন। আমাদের সতর্ক করে দেওয়া উচিত ছিল।’
আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সামুদ্রিক আবহাওয়ার প্রভাব রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সেখানকার আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সামনের দশকগুলোতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা গত বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশটি পরিদর্শন করেছেন। এই দুর্যোগকে তিনি ‘ব্যাপক আকারের বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, অবশ্যই এটা জলবায়ু পরিবর্তনের অংশ।