দক্ষিণ আফ্রিকায় সহিংসতা পূর্বপরিকল্পিত: প্রেসিডেন্ট
দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান সহিংস বিক্ষোভ পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসা। তিনি বলেছেন, এটা গণতন্ত্রের ওপর হামলা।
সম্প্রতি সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকম জুমাকে আদালত জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিলে দেশজুড়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১২ জন নিহত হয়েছে। শতাধিক দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিক্ষোভের উৎপত্তিস্থল এবং জ্যাকব জুমার নিজের প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতাল পরিদর্শনে গিয়ে রামফোসা বলেন, ‘এটা একেবারেই পরিষ্কার যে সহিংসতা ও লুটপাটের সব ঘটনা উসকানি থেকে ঘটেছে। এর পেছনে অনেকের হাত রয়েছে, যারা এটার পরিকল্পনা এবং সমন্বয় করেছে।’
সহিংসতাকারীরা দক্ষিণ আফ্রিকার গণতন্ত্র অপহরণ করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারা প্ররোচনা দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে লুটপাটের জের ধরে খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারগুলোয় খাবারের সরবরাহ ঠিক রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। শুধু কাওয়াজুলু নাতালে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের মজুত পণ্য চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশটির এক মেয়র। সেখানে কমপক্ষে ৮০০ দোকানে লুটপাট চালানো হয়েছে। খাবারের সন্ধানে অসহায় হয়ে পড়েছেন প্রদেশটির বাসিন্দারা।
তবে দেশে খাবারের কোনো সংকট নেই বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট রামফোসা।
গতকাল শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি খাবার—নেই এমন আতঙ্ক থেকে কেনাকাটা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ সময় সহিংসতা মোকাবিলায় দক্ষিণ আফ্রিকায় মানুষকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একসঙ্গে দাঁড়াই, তাহলে কোনো বিদ্রোহ বা সহিংসতা সফল হতে পারবে না। আমরা আমাদের গণতন্ত্র, সংবিধান, জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তা রক্ষায় লড়াই করে যাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
১৫ মাসের কারাদণ্ডাদেশ পাওয়ার পর গত বুধবার পুলিশে কাছে আত্মসমর্পণ করেন জ্যাকব জুমা (৭৯)। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৯ জুন জুমাকে এই কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই ঘটনার পর তাঁর নিজ প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।