আজারবাইজানের সঙ্গে আর্মেনিয়ার সংঘাত থামছেই না

আজারবাইজানের গানজা শহরে আর্মেনিয়ান বাহিনীর রকেট হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকর্মীরা। ৪ অক্টোবরএএফপি

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ থামার নাম নেই। দিন দিন তা বাড়ছে। আজ রোববার দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ এলাকায় নতুন করে পাল্টাপাল্টি রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজারবাইজান কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে বোমা বর্ষণ করেছে আর্মেনিয়ার বাহিনী।

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপির খবরে বলা হয়, বিতর্কিত নাগোরনো–কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘাতে নিয়মিত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে এবং বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিতর্কিত নাগোরনো–কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে সংঘাত শুরুর এক সপ্তাহ পর দেখা যাচ্ছে যে সংঘর্ষের পরিসর ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। এখন বেসামরিক এলাকায়ও তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।

গত রোববার থেকে বিতর্কিত অঞ্চলটিতে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। এ সংঘাতে দুই পক্ষেরই হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে বিবিসির খবরে। নাগোরনো–কারাবাখ অঞ্চলে গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় লড়াইয়ের ঘটনা। দুই পক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করেছে।

নাগোরনো–কারাবাখ নিয়ে অনেক বছর ধরে বৈরী সম্পর্ক আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। পার্বত্য অঞ্চল নাগোরনো-কারাবাখ সোভিয়েত আমলে আজারবাইজানের অংশ ছিল। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এক যুদ্ধে আর্মেনিয়ার সহায়তায় জাতিগত আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অঞ্চলটি দখল করে নেয়। দুই দেশের সীমান্তে গত রোববার ইয়েরেভান ও আজেরি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির পর পরিস্থিতি যুদ্ধাবস্থায় উপনীত হয়। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সত্ত্বেও ছয় দিন ধরে সেখানে যুদ্ধ চলছে।

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সেখানকার দুটি শহর তারতার ও হোরাদিজে রকেট হামলা চালিয়েছে আজারবাইজানের বাহিনী। আর্মেনিয়ার অভিযোগ, আজারবাইজানের বাহিনী ইচ্ছা করেই সাধারণ জনগণকে লক্ষ্যে পরিণত করছে। ব্যবহার করা হচ্ছে বিমানবাহিনী ও ড্রোন।

এএফপির খবরে বলা হয়, আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আর্মেনিয়াকে রকেট হামলার উপযুক্ত জবাব দিতে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজাতেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এ শহরে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষের বাস। বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীগুলো এরই মধ্যে দাবি করেছে, ওই শহরের একটি বিমানঘাঁটি তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
এদিকে দুই পক্ষই অভিযোগ তুলেছে, তাদের প্রতিপক্ষ শক্তি বেসামরিক এলাকায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে এবং বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।