আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার ওপর আগামী মাসের শুনানিতে মিয়ানমারের শীর্ষ প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন না দেশটির কারাবন্দী নেত্রী অং সান সু চি। মামলার বাদী রাষ্ট্র গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল আজ শুক্রবার এসব তথ্য জানান। খবর রয়টার্সের।

ওই মামলায় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) নতুন দফায় শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। মামলাটিতে এই আদালতের শুনানির এখতিয়ার থাকার বিষয়ে মিয়ানমার চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন করে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিষয়ে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা জালো বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই আদালতে মামলাটিতে হাইব্রিড শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে ২০১৯ সালে শুনানিতে অং সান সু চি মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করলেও এবার অন্য কেউ তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।’

হাইব্রিড শুনানি এমন একটি পদ্ধতিতে হয়, যেখানে বাদী–বিবাদী পক্ষ শারীরিক ও ভার্চ্যুয়াল উভয় পদ্ধতিতে অংশ নিয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই বিশেষ পদ্ধতিতে শুনানির আয়োজন করা হয়েছে।

গাম্বিয়ার তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন তিনি।

আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ কয়েক বছর সময় প্রয়োজন। তাই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় গাম্বিয়া মূল বিচার শুরুর আগে অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপের জন্য আইসিজের কাছে আবেদন করে। এ বিষয়ে ওই বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়। শুনানিতে গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমার স্ববিরোধী সাফাই দেয়।

২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভাঙার অভিযোগ আনা হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ওই সময় হত্যাকাণ্ড, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ ও শিশু।