আর্মেনিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩: আজারবাইজান

আর্মেনিয়ার হামলায় নিহত একজনের দাফন অনুষ্ঠানের আগে স্বজনদের আহাজারি। আজ শনিবার আজারবাইজানের গানজা শহরে।ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পরও থামছে না আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া লড়াই। আজ শনিবার দেশ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে। আজারবাইজান দাবি করেছে, গানজা শহরে আর্মেনিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আর আর্মেনিয়ার অভিযোগ, আজারবাইজান বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

নব্বইয়ের দশকের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াইয়ে লিপ্ত আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। এই সংঘাত নাগোরনো–কারাবাখ পাবর্ত্য এলাকা নিয়ে। আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটি আজারবাইজানের বলে স্বীকৃত। কিন্তু সেখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দা আর্মেনিয়ান ক্ষুদ্র জাতিসত্তার। তারাই অঞ্চলটি শাসন করে।

আজারবাইজানের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় বলেছে, নাগোরনো–কারাবাখ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এবং আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজার একটি আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে ধ্বংস হয়েছে ২০টির মতো ভবন। এই হামলায় ১৩ জন নিহত হন।

গানজায় বোমাবর্ষণ করে আর্মেনিয়া যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে অভিযোগ আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের। তিনি বলেন, ‘এটার জন্য তাদের (আর্মেনিয়া) জবাবদিহি করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটা না করলে আমরাই সেটার ব্যবস্থা করব।’ তিনি বলেন, আজারবাইজানের সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে আগেই ফিজুলি ও জাবরাইল অঞ্চলের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আজারবাইজানের সেনাবাহিনী বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা চালায় না দাবি করে আলিয়েভ বলেন, ‘আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে আধ্যিপত্য বজায় রেখেছি।’ নাগোরনো–কারাবাখ থেকে আমের্নিয়া সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁরা লড়াই থামাবেন না বলেও দাবি করেন তিনি।

শনিবার সকালে গানজায় উদ্ধার অভিযানস্থল ছিলেন রয়টার্সের এক আলোকচিত্র সাংবাদিক। তিনি বলেছেন, কিছু বাড়ি একেবারে মাটিতে মিশে গেছে। সেই ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ করছিলেন উদ্ধারকারীরা। স্থানীয় বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সী ইমিনা আলিয়েভা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো ছিল।’

আর্মেনিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর। আজ শনিবার আজারবাইজানের গানজা শহরে।
ছবি: রয়টার্স

তবে আজারবাইজানের শহরগুলোতে গোলাবর্ষণের ঘটনা নাকচ করে দিয়েছে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, আজারবাইজানের সেনাবাহিনী নাগোরনো–কারাবাখে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। এতে তিনজন বেসামরিক নগরিক আহত হয়েছেন।

শনিবারআজারবাইজান বলেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে সংঘাত শুরুর পর ৬০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২৭০ জন আহত হয়েছেন। তবে সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি দেশটি। নাগোরনো-কারাবাখ কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের ৬৩৩ সামরিক সদস্য এবং ৩৪ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এই সংঘাতে।