ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব, হুঁশিয়ারি দিয়ে আবার সুর নরম বিরোধী জোটের
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য স্পিকারকে কাল সোমবারের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বিরোধী দলগুলো। দাবি পূরণ না হলে ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ভন্ডুল করার হুমকি দিয়েছিল তারা। এর জন্য জাতীয় পরিষদে অবস্থান ধর্মঘটে বসার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পাঁচ ঘণ্টার মাথায় অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে দলগুলো।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দলগুলো সরাসরি হুমকি প্রত্যাহারের ঘোষণা না দিলেও সুর নরম করেছে। তারা এখন বলছে, ওআইসি সম্মেলনে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার আঁচ কোনোভাবেই পড়তে দেওয়া যাবে না। জাতীয় পরিষদেই মঙ্গলবার ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৪৮তম সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
শনিবার রাতে বিরোধী দলগুলোর জোটের পক্ষ থেকে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) তথ্যসচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে বিবৃতি পাঠান। বিবৃতিতে মুসলিম দেশগুলোকে আশ্বস্ত করা হয়। বলা হয়, পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিনিধি ও অন্য সম্মানিত ব্যক্তিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবে বিরোধী জোট। ইসলামাবাদে অবস্থানকালে ‘ঐতিহ্যগত রীতি অনুযায়ী তাঁদের প্রতি আতিথেয়তা, সম্মান ও আন্তরিকতা দেখানো হবে।’এসব সম্মানিত অতিথির আগমনকে নিজেদের আনন্দ ও গৌরবের উৎস বলে উল্লেখ করা হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ৮ মার্চ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে গত মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানায় তারা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, লিখিত আবেদন জমা পড়ার ১৪ দিনের মধ্যে স্পিকারকে আলোচনার জন্য অধিবেশন ডাকতে হবে। তার মানে হলো, ২২ মার্চের মধ্যে অধিবেশন আয়োজন করতে হবে। তবে এদিনই আবার জাতীয় পরিষদে শুরু হচ্ছে ওআইসির দুই দিনব্যাপী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রস্তাব উত্থাপনের তিন দিন পার হওয়ার পরই কেবল ভোটাভুটি করা যাবে। তবে ভোটাভুটির জন্য সাত দিনের বেশি সময় নেওয়া যাবে না।
এর মধ্যেই হঠাৎ গুঞ্জন শোনা যায়, বিরোধী দলের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে কাল সোমবার দুপুরে জাতীয় পরিষদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার পরিকল্পনা করছে সরকার। পাকিস্তান দিবস ও ওআইসি বৈঠককে কেন্দ্র করে অধিবেশনের প্রথম দিনেই তা তিন-চার দিনের জন্য মুলতবি করতে পারেন স্পিকার। এমন গুঞ্জনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিরোধী দলগুলো। এরপরই শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি দেওয়া হয়।