ঘরের ভেতর নানা চ্যালেঞ্জে জড়িয়ে নিজেকে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের পাত্রে পরিণত করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার এশিয়া সফরে বের হলেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া তাঁর এ সফর চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
দীর্ঘ এ সফরে ট্রাম্প জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনে যাবেন। গত ২৫ বছরে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য এটাই হবে দীর্ঘতম এশিয়া সফর। এর আগে ১৯৯১ সালের শেষ ও ১৯৯২ সালের শুরুতে দীর্ঘ এশিয়া সফরে আসেন জর্জ ডব্লিউ বুশ।
ট্রাম্পের এ সফর যে খুব সুখকর হবে তেমনটা মনে করছেন না বিশ্লেষকেরা। সফরে তিনি এমন কিছু দেশে যাবেন যাদের সঙ্গে তাঁর রয়েছে টানাপোড়েনের সম্পর্ক। তাই এ সফর তাঁর জন্য সত্যিকার অর্থেই দর-কষাকষি ও কূটনৈতিক দক্ষতা যাচাইয়ের এক পরীক্ষা হবে বলেই ধারণা তাঁদের।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার নানা উসকানিমূলক পদক্ষেপের লাগাম টেনে ধরতে ও কর্মসূচি থেকে পিছু হটতে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সফরে ওই সব দেশের সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা চালাবেন ট্রাম্প।
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের চলা তদন্তে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সাবেক ব্যবস্থাপক পল ম্যানাফোর্ট অভিযুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পর ট্রাম্প এই সফর শুরু করলেন।
সফরের লক্ষ্যে গতকাল সকালে হাওয়াই থেকে বিমানে ওঠেন ট্রাম্প। পরে প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ব্রিফিং করার জন্য সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করেন। যান পার্ল হারবারে। সেখান থেকে প্রথমে যাবেন জাপানে। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ায়। চীনে যাওয়ার আগে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন। চীনে গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে পিয়ংইয়ংয়ের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে চাপ দেবেন তিনি। পরে ভিয়েতনামের দানাংয়ে অনুষ্ঠেয় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার (অ্যাপেক) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। রাষ্ট্রীয় সফরে যাবেন হ্যানয়ে। ফিলিপাইনের ম্যানিলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে এশিয়া সফর শেষ করবেন তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, উত্তর কোরিয়া নিয়ে সৃষ্ট সংকট ও হুমকিতে পড়া ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তির প্রেক্ষাপটে নতুন করে আরও বাণিজ্য চুক্তি করার মতো ক্ষেত্রে এ সফর ট্রাম্পের জন্য হবে দর-কষাকষি ও কূটনৈতিক দক্ষতা প্রমাণের এক পরীক্ষা।