দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে দায়ের করা শতাধিক ফৌজদারি মামলা তুলে নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কলকাতার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আজ শনিবার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বিমল গুরুং ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বা দলের সভাপতি। তিনি পৃথক দল করলেও সমর্থন দিয়ে আসছিলেন বিজেপিকে। বিমল গুরুংদের সমর্থন নিয়ে লোকসভার দার্জিলিং আসনে ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী জয়ী হন।
কলকাতার সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে দায়ের করা শতাধিক মামলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের আইন মন্ত্রণালয়। তবে ওই নির্দেশে বাদ দেওয়া হয়েছে খুনের মামলা। খুন ছাড়া অন্যান্য মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে আরও বলা হয়, ইতিমধ্যে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং জেলায় বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৭০টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি মামলাও প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
২০১৭ সালে এই বিমল গুরুং দার্জিলিংকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে গোটা পাহাড় অশান্ত করে তুলেছিলেন। সে সময় বিমল গুরুংয়ের তীব্র আন্দোলনের জেরে দার্জিলিংয়ে একটানা তিন মাসের বেশি সময় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ্ পালিত হয়। আন্দোলনে দার্জিলিংয়ে শান্তিশৃঙ্খলার প্রচণ্ড অবনতি ঘটে। একের পর এক খুন, অগ্নিসংযোগ, সরকারি অফিস ভাঙচুর, মারপিট, হিংসার ঘটনার কারণে বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করা হয়। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার এড়াতে বিমল গুরুং আত্মগোপনে চলে যান।
একটা সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিমল গুরুংকে সরিয়ে কাছে টেনে নেন জনমুক্তি মোর্চার অন্য এক নেতা বিমল তামাংকে। মমতা বিমল গুরুংকে গোর্খা পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে সেখানে বিমল তামাংকে বসান।
মমতার এসব পদক্ষেপের পর ভোল পাল্টান গুরুং। মমতার সান্নিধ্য পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘোষণা দেন পশ্চিমবঙ্গে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগ্য মমতাই। মমতাও রাজ্যে বিজেপিবিরোধী রাজনীতির স্বার্থে বিমল গুরুংকে কাছে টেনে নেন। এরপর বিমল গুরুং মমতার আশীর্বাদ নিয়ে প্রকাশ্যে আসেন।
এর ধারাবাহিকতায় বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় রাজ্যের আইন মন্ত্রণালয়।