টিকাকেন্দ্রে সুপারম্যান–আয়রনম্যান
অভিভাবকের হাত ধরে করোনার টিকাকেন্দ্রে এসেছে শিশুরা। সামাজিক দূরত্ব মেনে বসে আছে। একটু পর দেওয়া হবে টিকা। অনেকেই করোনার টিকা নিতে ভয় পাচ্ছে। হঠাৎই টিকাকেন্দ্র হাজির সুপারম্যান, আয়রনম্যান, ব্যাটম্যান, ক্যাপ্টেন আমেরিকার মতো সুপারহিরোরা। তারা শিশুদের সঙ্গে খেলছে, গান গাইছে আর নাচছে। খেলাচ্ছলে শিশুদের টিকা নিতে উৎসাহ দিচ্ছে। ভয় কাটাতে সহায়তা করছে।
এমনই মজার দৃশ্য দেখা গেছে গত সোমবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় শিশুদের একটি টিকাকেন্দ্রে। তবে টিভি কিংবা সিনেমা হলের পর্দা থেকে সুপারহিরোরা বেরিয়ে আসেনি। পেশাদার অভিনেতা ও মডেলরা জনপ্রিয় সব সুপারহিরোর পোশাক পরে শিশুদের সামনে এসে হাজির হয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল নেচে–গেয়ে–খেলে করোনার টিকা নিতে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ভয় কাটানো। তাদের উৎসাহ জোগানো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, টিকাকেন্দ্রে অপেক্ষমাণ শিশুদের সঙ্গে বেলুন হাতে খেলছেন আয়রনম্যানের পোশাক পরা একজন। জোকারের পোশাকে একজন শিশুদের সঙ্গে নেচেগেয়ে সময় কাটাচ্ছেন। এক শিশুকে টিকা দেওয়া হচ্ছে, পাশেই ক্যাপ্টেন আমেরিকার পোশাক পরা একজন ওই শিশুকে সাহস জোগাচ্ছেন। শিশুদের জন্য এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনের প্রশংসা করেছেন অনেকেই।
ফিলিপাইনের জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। ইতিমধ্যে দেশের অর্ধেক মানুষকে করোনার টিকা দিয়ে ফেলেছে দেশটির সরকার। তবে দেশটির প্রান্তিক অনেক এলাকায় এখনো অনেক মানুষ টিকা পাননি। এর মধ্যেই দেশটিতে শতভাগ মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে ফিলিপাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে দেশি–বিদেশি চাপ রয়েছে দেশটির সরকারের ওপর। তাই ফিলিপাইন সরকার শিশুদের টিকা দেওয়ার ওপর বাড়তি জোর দিয়েছে।
ম্যানিলার একটি কেন্দ্রে স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছিলেন মারিসা। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে প্রায় দুই বছর ধরে সহপাঠীদের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করতে পারেনি। এখন সে টিকা পেয়েছে। আশা করছি, দ্রুত স্কুল খুলবে। সে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।’