তলেতলে একজোট সৌদি আরব ও ইসরায়েল

ফাইল ছবি: রয়টার্স ও এএফপি

ইরানের বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে গোপন বৈঠক করেছে সৌদি আরব ও ইসরায়েল। চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ওই বৈঠকে অংশ নেন দুই দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। দিনে দিনে সামরিক সক্ষমতায় শক্তিশালী হয়ে ওঠা ইরানকে রুখতে দেশ দুটি তলেতলে একজোট হয়েছে।

গতকাল রোববার সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান আজ সোমবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোপন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিসরের শারম আল-শেখ শহরে। সেখানে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফের সঙ্গে দেখা করেন সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, জর্ডান ও মিসরের প্রতিনিধিরা। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে। এ নিয়ে মাথাব্যথা রয়েছে ইসরায়েল ও সমমনা আরব দেশগুলোর। এমন পরিস্থিতিতে তেহরানকে সামাল দিতে আরব দেশগুলোর সঙ্গে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের বৈঠকের আয়োজন করল ইসরায়েল।

২০২০ সালের আগষ্টে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্থাপন করতে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামের একটি চুক্তি করে ইসরায়েল। এর পর থেকে দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে তেল আবিব।

তবে সৌদি আরব ও কাতারের সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু গোপনে দেশ দুটির মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করা হয়। আর গত মার্চের ওই বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও ইসরায়েল আরও এগিয়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে সৌদি আরব প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নয়। এর আগে দেশটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।

আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ও সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই সফরে তিনি দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে ঘোষণা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দায়িত্ব নেওয়ার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সচেষ্ট হন। সৌদি আরবের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে যুগান্তকারী সংস্কার উদ্যোগও নিয়েছেন তিনি।