ভারতের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী দিশা রবির পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে আরেক পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। আজ শনিবার গ্রেটা এক টুইট বার্তায় বলেন, বাক্স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ মানবাধিকারের প্রাথমিক শর্ত। গণতন্ত্রেরও মূল ভিতও এটি। গ্রেটা তাঁর টুইট বার্তার সঙ্গে হ্যাশট্যাগ স্ট্যান্ড উইথ দিশা রবি জুড়ে দেন।
গ্রেটার এই সমর্থন বার্তা আসার দিনই দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক ধর্মেন্দ্র রানার এজলাসে দিশার জামিন মামলার শুনানি শুরু হয়। গত শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট দিশাকে সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আজ শনিবার সাড়ে তিন ঘণ্টা শুনানির পর দুই পক্ষের যুক্তি শুনে বিচারক রানা মঙ্গলবার পর্যন্ত রায় প্রদান স্থগিত রাখেন। তবে এর আগে তাঁর মন্তব্য, পুলিশের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে যেসব যুক্তি দেখানো হয়েছে, সেগুলোর বেশ কটিই তাঁর কাছে অনুমান মনে হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের দাবি, দিশা ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘খলিস্তানি’ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এমন অভিযোগ অস্বীকার করে দিশার আইনজীবী বলেন, খলিস্তান আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্কই দিশার নেই। দিশার সঙ্গে নিষিদ্ধ ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) সংগঠনের কারওর কথাবার্তার কোনো প্রমাণও পুলিশ দাখিল করতে পারেনি।
পুলিশের অভিযোগ, পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের (পিএফজে) প্রতিষ্ঠাতা এম ও ধালিওয়ালের সঙ্গে দিশার ‘জুম’ কলের মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। ধালিওয়াল এসএফজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সবাই তা জানে। দিল্লি পুলিশের এই দাবির মুখে বিচারক বলেন, ‘না। আমি ধালিওয়ালকে চিনি না। জানিও না তিনি কে।’
এ সময় দিশার আইনজীবী বলেন, জুম কলে অন্তত ৪০ জন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা পুলিশের কাছে জানতে চান, ২৬ জানুয়ারির হাঙ্গামায় দিশা জড়িত এমন কোনো প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে কি না। পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এস ভি রাজু বলেন, কোনো চক্রান্তে সবার ভূমিকা এক হয় না। দিশার আইনজীবী এ সময় বলেন, লাল কেল্লার হাঙ্গামার অভিযোগে ১৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের একজনের সঙ্গেও দিশার কথা হয়েছে এমন তথ্য পুলিশ দাখিল করতে পারেনি।
দুই পক্ষের যুক্তি শোনার পর বিচারক রানা বলেন, নিজে সন্তুষ্ট না হলে রায় দিতে পারবেন না। টুলকিট ব্যবহার কেন আপত্তিকর, ২৬ জানুয়ারির লাল কেল্লায় হামলার সঙ্গে দিশার সম্পর্ক কোথায়, খলিস্তানিদের সঙ্গেও কী করে বা তিনি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তা নিয়ে বিচারক রানা বারবার প্রশ্ন তুলে বলেন, অনেক যুক্তিই নিছক অনুমান মনে হচ্ছে।