শ্রদ্ধা জানাতে আবের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা

জাপানের নারা শহর থেকে মোটর শোভাযাত্রাসহকারে শিনজো আবের মরদেহ তাঁর টোকিওর বাড়িতে আনা হয়। শনিবার বিকেলে
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

আততায়ীর গুলিতে নিহত জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। এ জন্য স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজধানী টোকিওতে শিনজো আবের বাড়িতে যান। এর আগে বিকেলে মোটর শোভাযাত্রাসহকারে আবের মরদেহ তাঁর টোকিওর শিবুয়া ওয়ার্ডের বাড়িতে আনা হয়।

নারা শহরের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে শুরু হওয়া মোটর শোভাযাত্রায় অংশ নেন প্রয়াত আবের স্ত্রী আকিয়ে। গত শুক্রবার নারা শহরে একজন বন্দুকধারীর অতর্কিত হামলায় নিহত হন শিনজো আবে। তিনি দুবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। জাপানে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে (দুই দফায় প্রায় ৯ বছর) ক্ষমতায় ছিলেন আবে।

আগামীকাল রোববার জাপানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নির্বাচন। এ উপলক্ষে নিজ দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একজন প্রার্থীর প্রচার সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন আবে। এ সময় তাঁকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। আবেকে হত্যার ঘটনায় বন্দুকধারী তাৎসুইয়া ইয়ামাগামিকে (৪১) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাৎসুইয়া সাবেক নৌসেনা বলে জানা গেছে।

আবের মরদেহ পৌঁছানোর আগে থেকেই তাঁর টোকিওর বাড়িতে অপেক্ষায় ছিলেন এলডিপির চেয়ারপারসন সানায়ে তাকাইচি, দলের নীতি ও গবেষণা পরিষদের প্রধান তাতসুও ফুকুদা প্রমুখ।

এদিকে জাপানের প্রধান দলগুলোর নেতারা আবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এলডিপির মহাসচিব তোশিমিৎসু মোতেগি আজ দলের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আবের হত্যার ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, মর্মান্তিক এই ঘটনার এক দিন আগে শিনজো আবের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। ওই সময় তিনি (আবে) পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

আবের ছোট ভাই ও জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নোবুও কিশি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর ভাই নিজের জীবন রাজনীতির জন্য উৎসর্গ করেছেন। আবের এমন বিদায় তাঁকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এক টুইট বার্তায় বলেন, নৃশংস এই ঘটনা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে অস্বীকার করার জন্য চালানো হয়েছে। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

আরও পড়ুন

নিজ দল এলডিপিতে আবের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত শিগেরু ইশিবাও বলেন, অবস্থানগত দিক থেকে আবের থেকে তাঁর দূরত্ব ছিল ঠিকই। তারপরও তাঁরা দুজনেই এলডিপির নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।

বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও আবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ক্ষমতাসীন জোটের অংশীদার কোমেই পার্টির নেতা নাৎসুও ইয়ামাগুচি বলেন, নীতিগত বিভিন্ন প্রশ্নে আবের সঙ্গে প্রায়ই মতামত বিনিময়ের সুযোগ তাঁর হয়েছে। জনগণের কল্যাণে কাজ করার অভিন্ন ধারণা তাঁরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদা বলেন, পেছন থেকে গুলি করে সাবেক একজন জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ঘটনার মর্মান্তিকতায় শোক প্রকাশের ভাষা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন।

জাপানের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কাজুও শিই বলেন, ‘ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান হলেও একই বছরে জন্ম নেওয়া ও একই সময়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ঘনিষ্ঠ এক রাজনৈতিক সহকর্মীর মৃত্যুতে আমি অত্যন্ত মর্মাহত।’

আরও পড়ুন