সন্তান জন্মদানে উদ্বুদ্ধ করছে চীন, বাড়ছে মাতৃত্বকালীন ছুটি

প্রতীকী ছবি
ছবি: রয়টার্স

কর্মক্ষম জনশক্তি বাড়াতে দম্পতিদের সন্তান জন্মদানে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে চীন। এর অংশ হিসেবে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিধি শিথিলের পর এবার মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে তারা। বেইজিং, সাংহাইসহ বেশ কিছু শহরের কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

চীনে বর্তমানে জাতীয়ভাবে ৯৮ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটির বিধান চালু রয়েছে। এ সময় কর্মজীবী নারীরা পূর্ণ বেতন পেয়ে থাকেন। তবে স্থানীয়ভাবে দেশটির একেক অঞ্চলে মাতৃত্বকালীন ছুটির বিধান একেক রকম। গতকাল শুক্রবার বেইজিং শহরের স্থানীয় সরকার ঘোষণা করেছে, নারীরা এখন থেকে ১৫৮ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। শহরটিতে এত দিন যে নিয়ম চালু ছিল তার তুলনায় ৩০ দিন ছুটি বাড়ছে। এর এক দিন আগে একই রকমের ঘোষণা দিয়েছে সাংহাই কর্তৃপক্ষও।

পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় সন্তান জন্ম দেওয়া মায়েদের জন্য ১৮৮ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বেইজিংয়ে নতুন বাবারাও চাইলে তাঁদের নির্ধারিত পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে নিতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর ছুটি ভাগাভাগি করে নিতে হবে তাঁকে। ঝেজিয়াং প্রদেশে ১৫ দিন এবং সাংহাইতে ১০ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটির নিয়ম বহাল থাকছে।
চীনের বিভিন্ন এলাকায় মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন আলোচনা হতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আশঙ্কা জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে নারীদের বেকারত্বের হার বাড়বে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়ার আগে দুবার ভাববে। কেউ কেউ আবার বেইজিংয়ে পিতৃত্বকালীন ১৫ দিনের ছুটির বিধান অপরিবর্তনীয় রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।

গত বছর চীনে প্রতি ১০০০ জনসংখ্যার বিপরীতে নতুন জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৮ দশমিক ৫২। ১৯৭৮ সালের পর এ জন্মহার সবচেয়ে কম। ১৯৭৮ সাল থেকেই মূলত বার্ষিকভাবে নতুন জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা নথিভুক্ত করতে শুরু করেছিল চীন।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মহার কম থাকায় জনবল সংকটের মুখে পড়েছে চীন। কর্মস্থলে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, কমে যাচ্ছে অর্থনৈতিক গতি।
২০১৬ সালে কঠোর ‘এক সন্তান নীতি’ থেকে সরে আসে চীন। ওই বছর ঘোষণা করা হয়, যেকোনো দম্পতি দুটি করে সন্তান নিতে পারবেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে বিধিতে আবারও পরিবর্তন এনে বলা হয়, এখন থেকে তিন সন্তানের জন্ম দেওয়া যাবে। তবে জীবনযাপনের ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত সে উদ্যোগ সাফল্যের মুখ দেখেনি।