ইরানে পানির দাবিতে বিক্ষোভে গুলি, নিহত ৩

ইরানের পতাকা।
ছবি: রয়টার্স

ইরানে পানির দাবিতে চলমান বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর চালানো হয়েছে গুলি। এতে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রোববার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। খাওয়া ও চাষাবাদের জন্য পানির সরবরাহ বাড়ানোর দাবিতে গত সপ্তাহে সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা পাশের পশ্চিমাঞ্চলের লরেস্তান প্রদেশের আরিগোদারজ শহরসহ দেশটির বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। আরিগোদারজ শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর চালানো গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত তিনজন।

তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গুলি চালানোর ঘটনা ও মৃত্যুকে ‘রহস্যজনক’ বলেছে। কর্তৃপক্ষের বরাতে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলছিল। এতে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, সেটা এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যদিও অধিকারকর্মীরা বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের গুলিতে নিহত হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

গত অর্ধশতকের মধ্যে ইরানে সবচেয়ে ভয়াবহ খরা চলছে। দেখা দিয়েছে চরম পানির সংকট। সংকটের জেরে দেশটির কৃষি ও পশুপালন খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। মানুষের নিত্যদিনের জীবনযাপন কঠিন হয়ে গেছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কার্যক্রমে। খাওয়ার পানি ও চাষাবাদের জন্য পানির সরবরাহ বাড়ানোর দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে ইরানিরা বিক্ষোভ করছেন।

আরও পড়ুন

স্থানীয় দুটি সূত্রের বরাতে সিএনএন বলছে, তেলসমৃদ্ধ খুজেস্তান প্রদেশে সপ্তাহজুড়ে চলমান পানির দাবিতে বিক্ষোভে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও বেশি। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিক্ষোভের কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর সশস্ত্র সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশ। শনিবার তাঁদের গুলিতে প্রাণ গেছে বিক্ষোভকারীদের।

সরকারি হিসাবে ৩ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হলেও এই সংখ্যা অন্তত ১০ জন বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি (এইচআরএএনএ)। সংস্থাটি বলছে, সহিংস বিক্ষোভে আহত হয়েছেনে অনেকেই। গত ১০ রাতে ইরানজুড়ে ৩০টি শহর থেকে অন্তত ১০২ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

ইরানের খুজেস্তানে সংখ্যালঘু আরব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন, তাঁরা বৈষম্যের শিকার। বিক্ষোভের একটি ভিডি চিত্রে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যকে বিক্ষোভরত এক নারী বলছেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হচ্ছে। আপনি গুলি করলেন কেন?’