ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজায় হামাসের প্রধান পুনর্নির্বাচিত

ইয়াহিয়া সিনওয়ার
ছবি: রয়টার্স

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের কট্টরপন্থী সংগঠন হামাসের প্রধান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার। বুধবার সংগঠনটির কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ নিয়োগের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শাখায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিয়ন্ত্রণ আরও স্পষ্ট হয়েছে। তিনি দুই দশকের বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

২০১৭ সাল থেকে ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০১১ সালে ২০ বছরের বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিজীবন কাটিয়ে মুক্ত হন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি গুপ্তচর হত্যাসহ কয়েকটি অভিযোগ ছিল।

ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতির ঘোর বিরোধী ইয়াহিয়া সিনওয়ার। এরপরও গাজা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে তাঁর অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে মিসরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে সদা উচ্চকণ্ঠ সিনওয়ার।

গাজার রাজনীতি নিয়ে গবেষণার কাজ করেন আদনান আবু আমির। এ গবেষক বলেন, হামাস প্রধান হিসেবে সিনওয়ারের বিজয় গাজা ভূখণ্ডে এ নেতার কঠোর নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষত হামাসের সামরিক অংশে তাঁর নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখবে।

গাজায় হামাসের প্রধান হওয়ার লড়াইয়ে সিনওয়ারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিজার আওয়াদাল্লাহ। তিনিও দীর্ঘ সময় ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। ২০১১ সালে উভয় পক্ষের ঐতিহাসিক বন্দী বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নে তিনি সহ–আলোচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ চুক্তির অধীনে দীর্ঘ কারাবাস শেষে মুক্ত হয়ে গাজায় ফিরে আসেন সিনওয়ার।

এক বিবৃতিতে আওয়াদাল্লাহ বলেন, ‘লক্ষ্য অর্জন ও আন্দোলন এগিয়ে নিতে আমরা সব সময়ই তাঁর (সিনওয়ারের) পাশে আছি।’

হামাস এখন ইসরায়েল–নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম তীরে সংগঠনের নেতা নির্বাচন করবে। যদিও নতুন এ নেতার পরিচয় এখনই প্রকাশ করা হবে না বলে সংগঠন সূত্রের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স। মূলত ইসরায়েলের কাছে তাঁর পরিচয় আপাতত গোপন রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।

মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ ২০০৭ সালে হামাসের কাছে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারায়। এরপর একাধিকবার ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সব কটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তবে মিসরের মধ্যস্থতায় ২০১৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়।

তবে ওই সমঝোতার ফলে হামাসের বিশাল সামরিক শাখার কী হবে—তা অমীমাংসিত রয়ে যায়। প্রসঙ্গত, সামরিকভাবে তুলনামূলক শক্তিশালী হামাস ২০০৮ সাল থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।