জেরুজালেমে উগ্রবাদী ইহুদিদের মিছিলের অনুমতি, আবার সহিংসতার আশঙ্কা

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় জ্বলছে হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন হানাদি কম্পাউন্ড। ফিলিস্তিন, ১১ মে
ছবি: এএফপি

জেরুজালেমের ওল্ড সিটিতে আগামী সপ্তাহে কট্টর ইহুদিবাদী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রমের সমর্থকদের মিছিলের অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার। ইতিমধ্যে হামাস এই কর্মসূচিকে ঘিরে নতুন করে সহিংসতা শুরুর আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে। আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশও। খবর রয়টার্সের।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা গত মঙ্গলবার বলেছেন, তাঁরা কিছু শর্ত সাপেক্ষে উগ্রপন্থী সংগঠনগুলোকে আগামী সপ্তাহে ওই মিছিলের অনুমতি দিচ্ছেন। এক দিন আগেই ইসরায়েলি পুলিশ মিছিলের রুট নিয়ে আপত্তি তোলে। তাদেরও আশঙ্কা, পূর্বপরিকল্পিত রুটে মিছিল হলে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধতে পারে।

পরিকল্পিত পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে জেরুজালেমে এরই মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন নিজেদের বাড়িঘর থেকে উৎখাত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ফিলিস্তিনিরা।

ওল্ড সিটির দামেস্ক গেট ও ফিলিস্তিনি মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকার ভেতর দিয়ে কাল বৃহস্পতিবার এ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিল কয়েকটি উগ্র ডানপন্থী ইসরায়েলি সংগঠন। তবে পুলিশ পূর্বঘোষিত রুটে মিছিল করার অনুমতি দেয়নি।

পরে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার এক বৈঠক শেষে তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে মিছিলের আয়োজকদের মতৈক্যে পৌঁছানোর শর্তে আগামী সপ্তাহে এ কর্মসূচি আয়োজন করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন মন্ত্রীরা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে আরও বলেছে, পুলিশ ও আয়োজকদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী মঙ্গলবার এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।

গত মাসে সংঘর্ষে গাজা উপত্যকায় মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ভবনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস গোয়েন্দা কার্যালয় চালাচ্ছিল দাবি করে ভবনটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল। তবে এপি বলেছে, ইসরায়েল তার বক্তব্যের সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি।

দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ক্ষমতা শেষ হতে পারে আগামী রোববারই। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এক জোট হওয়া বিরোধী দলগুলোর নতুন সরকার অনুমোদন পাচ্ছে কি না, সেটি এদিন জানা যাবে। নতুন সরকারের স্বীকৃতি প্রশ্নে ওই দিন পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে পরিকল্পিত ওই পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে জেরুজালেমে এরই মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন নিজেদের বাড়িঘর থেকে উৎখাত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ফিলিস্তিনিরা।

অন্যদিকে ইসরায়েলের কট্টর ইহুদিবাদী আইনপ্রণেতা ইতামার বেন-জিভির মিছিল পেছানোর ঘটনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটা হামাসের কাছে আত্মসমর্পণ।

তথ্য-প্রমাণ চায় এপি
রয়টার্সের অপর এক খবরে বলা হয়, গত মাসে সংঘর্ষে গাজা উপত্যকায় মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ভবনে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস গোয়েন্দা কার্যালয় চালাচ্ছিল দাবি করে ভবনটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল। তবে এপি বলেছে, ইসরায়েল তার বক্তব্যের সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি। এপি তথ্য-প্রমাণ চায়।

উল্লেখ্য, গাজার ওই টাওয়ার ভবনে এপি ছাড়াও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাসহ একাধিক সংবাদ সংস্থার অফিস ছিল। ইসরায়েলের হামলায় পুরো ভবন ধুলায় মিশে যায়। মঙ্গলবার ইসরায়েল তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আবারও দাবি করেছে, ওই ভবনে হামাসের ইন্টেলিজেন্স উইং কাজ করছিল।

এদিকে হামলার ওই ঘটনাটিকে যুদ্ধাপরাধ বলে মন্তব্য করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)।