পাহাড়ঘেরা ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে চায় ইরান

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির (ডানে) সঙ্গে দেশটির আণবিক প্রযুক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহী
ছবি: রয়টার্স

পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির মূল উপাদান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। বিষয়টি আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থাকে (আইএইএ) আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে দেশটি। পাহাড়ঘেরা ভূগর্ভস্থ একটি পারমাণবিক স্থাপনায় এ কর্মসূচি শুরু করতে চায় তেহরান।

আএইএর বিবৃতির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। ইরান বলেছে, তারা ইউরেনিয়াম ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক চুক্তির আগপর্যন্ত ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার এই স্তরেই পৌঁছেছিল, এখান তারা সে জায়গায় যেতে চায়।

২০১৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর ইরানও পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। গত মাসে দেশটির শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির পার্লামেন্ট পারমাণবিক কর্মসূচি জোরদারের লক্ষ্যে আইন পাস করে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র। ছয় জাতি চুক্তি হিসেবে পরিচিত এ চুক্তিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া রয়েছে রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি। ওই চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং আইএইএ ইরানের যেকোনো পারমাণবিক স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর গত বছর এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ইরান আবার তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেয়।

গত মাসে ইরানের শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ গাড়ি বোমা হামলায় নিহত হন। পশ্চিমা বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোহসেন ফাখরিজাদেহকে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। এ ছাড়া কূটনীতিকেরা প্রায়ই তাঁকে ‘ইরানের বোমার জনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। তাঁকে হত্যার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার বিষয়ে ইরানের সাম্প্রতিক ঘোষণা ওয়াশিংটনের নতুন বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে। সূত্র: এএফপি ও রয়টার্স