ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘খাঁড়ার ঘা’

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতিরয়টার্সের ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি সম্প্রসারণে নতুন এক পরিকল্পনা নিয়েছে ইসরায়েল। এ পরিকল্পনার আওতায় এই এলাকায় নতুন নতুন মহাসড়ক, পাতালপথ ও ওভারপাস নির্মাণ করছে দেশটি। বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে ইউএনবির খবরে সোমবার এ কথা বলা হয়।

এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে কয়েক বছরের মধ্যে ওই সব বসতির বাসিন্দারা জেরুজালেম ও তেল আবিবে অবাধে যাতায়াত করার সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে নিজেদের শহরগুলোর এক বিরাট অংশে অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন ফিলিস্তিনিরা।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, ইসরায়েলের এ পদক্ষেপে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ কার্যক্রম আরও গতিশীল হওয়ার পথ খুলবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যদি ইসরায়েলকে নতুন বসতি নির্মাণ বন্ধে রাজি করায়ও, তবু দেশটিকে বেশি দিন বাগে রাখা যাবে না।

খবরে বলা হয়, ব্যয়বহুল এসব প্রকল্প এটাই ইঙ্গিত দেয় যে ভবিষ্যতে কোনো শান্তি চুক্তি হলে নিজ দখলে রাখা বিশাল এলাকা ও সেখানকার অবকাঠামোকে ইসরায়েল দর–কষাকষির মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। তা ছাড়া প্রকল্পগুলো একটি স্বাধীন ও যৌক্তিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকেও কঠিনতর করে তুলবে।

তবে এসব নতুন প্রকল্পের গবেষণা ও রূপরেখা প্রণয়নে যুক্ত ব্যক্তিদের অন্যতম ইসরায়েলি কর্মী ইয়াহুদ শল বলেন, এই পরিকল্পনায় আরও কয়েক শ বসতি স্থাপনের কথা নেই। কার্যত এই পদক্ষেপ বসতির অধিবাসীদের সুযোগ–সুবিধা বাড়াবে। ইতিমধ্যে একটি বড় পাতালপথ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে মেল অ্যাডুমিন এলাকার বসতি স্থাপনকারীরা একদিন পূর্ব জেরুজালেম ও আরও সম্মুখে তেল আবিব শহরে কোনো সামরিক তল্লাশি ও ট্রাফিক বাধা ছাড়াই যাতায়াত করতে পারবেন।

১৯৬৭ সালে যুদ্ধে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। তখন থেকেই এখানে অবৈধ বসতি গড়ে তুলছে দেশটি। বর্তমানে এসব বসতিতে বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় সাত লাখ।

দক্ষিণ জেরুজালেমের প্রধান মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজও শুরু হয়েছে। এটি ঘাশ এটজিওন বসতি ও এর আরও দক্ষিণে গিয়ে মিলবে। সঙ্গে থাকবে পাতালপথ ও ওভারপাস। এগুলো ব্যবহার করে বসতির বাসিন্দারা ফিলিস্তিনিদের গ্রাম ও শরণার্থীশিবির এড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।

১৯৬৭ সালে যুদ্ধে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। তখন থেকেই এখানে অবৈধ বসতি গড়ে তুলছে দেশটি। বর্তমানে এসব বসতিতে বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। ফিলিস্তিনিরা তাঁদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রে এই উভয় ভূখণ্ডকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করছে। ইহুদি বসতিগুলোকে তাঁরা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা বলে মনে করে থাকেন। তাঁদের এমন দাবি ও অবস্থানে ব্যাপক সমর্থন রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।