মাস পেরোতেই বৈরুত বন্দরে ফের আগুন, আতঙ্কে বাসিন্দারা

মাস পেরোতেই লেবাননের বৈরুত বন্দরে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। লেবানন, ১০ সেপ্টেম্বর
ছবি: রয়টার্স

এক মাস পেরোতেই বৈরুত বন্দরে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বন্দরের ডিউটি ফ্রি জোনের একটি তেল ও টায়ারের গুদামে এই আগুন লাগে। আগুনের উৎসের ব্যাপারে সেখানকার দায়িত্বশীলেরা ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবারের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। গত ৪ আগস্ট লেবাননের এই বন্দরে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এতে শ দু-এক মানুষ নিহত ও সাড়ে ছয় হাজারের বেশি আহত হন। আর বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছেন তিন লাখের মতো মানুষ। ওই ঘটনার পর দেশটির সরকার পদত্যাগ করে।
বৃহস্পতিবারের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে লেবাননের সদ্য পদত্যাগী গণপূর্ত মন্ত্রী মাইকেল নাজার বলেন, প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে বিধ্বস্ত বন্দরে সংস্কারের সময় ওয়েল্ডিং থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। প্রসঙ্গত,গত মাসের বিস্ফোরণে বৈরুত বন্দর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়। বর্তমানে এর সংস্কারের কাজ চলছে।
অন্যদিকে দেশটির সেনা সূত্র বলছে, তেল গরম করার সময় টায়ারের স্তূপে আগুন লাগে।

বৈরুত বন্দরের একটি গুদামে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে। লেবানন, ১০ সেপ্টেম্বর
ছবি: রয়টার্স

স্থানীয় বাসিন্দা মাজেদ হাসানাইন বলেন, আজকের ঘটনা তাঁকে গত মাসের ভয়াবহতার কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গাড়ি চালিয়ে দ্রুত শহরের বাইরে চলে যান। কারণ ঘন কালো ধোঁয়ায় বৈরুতের আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল। একই কথা জানান অন্যান্য বাসিন্দারাও।

গত মাসের ভয়াবহ বন্দর বিস্ফোরণে দুঃস্বপ্ন এখনো বৈরুতবাসীকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এত দিনেও ওই ঘটনার কোনো প্রাথমিক কারণ জানাতে পারেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ। এতে অনেক লেবানিজই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় লেবানিজদের অবসাদ আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গুদামের অগ্নিকাণ্ডে ঘন কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় বৈরুতের আকাশ। লেবানন, ১০ সেপ্টেম্বর
ছবি: রয়টার্স

দ্য আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের সহযোগী অধ্যাপক ও মানবাধিকার কর্মী কারম্যান গেহা বলেন, মাসের মাথায় একই স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর কতটা অব্যবস্থাপনা রয়েছে। এরা বছরের পর বছর দুর্নীতি ও দুর্বল শাসনের মাধ্যমে পুরো জাতিকে সংকটের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
লেবাননের পাবলিক প্রসিকিউটর এই ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি হেলিকপ্টার দিয়ে সেনা সদস্যরা কাজ করেন।