ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের অজুহাত খুঁজছে রাশিয়া। এ লক্ষ্যে চলছে ষড়যন্ত্র। ইউক্রেনকে বেকায়দায় ফেলতে সাজানো হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে তারা। স্থানীয় সময় শুক্রবার এমন তথ্য সামনে এনেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। খবর এএফপির।

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে মরিয়া ইউক্রেন। তবে এতে নারাজ রাশিয়া। গত বছর শেষের দিক থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করা যাবে না। ইউরোপের পূর্ব দিকে আর বিস্তার ঘটানো যাবে না ন্যাটোর। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা নেই তাদের। এরপরও এ ইস্যুতে উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গন।

এদিকে ইউক্রেনে অভিযান চালাতে মস্কো যে একটি অজুহাত দাঁড় করানোর পথে হাঁটছে তা অবশ্য একদিন আগেই বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলাইভান। এরপরই মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি শুক্রবার বলেন, সাজানো হামলা চালাতে একটি দলকে প্রস্তুত করেছে রাশিয়া। হামলাটি এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যেন মনে হয় রাশিয়া কিংবা ইউক্রেনে বসবাসরত রুশভাষীদের লক্ষ্য করে তা চালানো হয়েছে। এই ছুতোয় দেশটিতে ঢুকে পড়বে রুশ বাহিনী।

একই কথা বলেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি। তিনি মনে করেন, মার্কিন গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর কয়েক সপ্তাহ আগে সাজানো হামলাগুলো হবে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে হামলাগুলো শুরু হতে পারে।

অন্তর্ঘাতমূলক হামলার জন্য প্রস্তুত করা রুশ দলটির সম্পর্কেও কিছুটা আভাস দিয়েছেন জেন সাকি। তারা আধুনিক যুদ্ধকৌশল ও বিস্ফোরক ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে মার্কিনিদের এমন দাবির বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ একে ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও জন কারবি বলেছেন, প্রকাশিত এসব গোয়েন্দা তথ্য ‘একেবারেই নির্ভুল’। তিনি এ-ও বলেছেন, হামলার জন্য প্রস্তুত দলে রাশিয়ার গোয়েন্দা সদস্য, সেনা সদস্য ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা থাকতে পারেন।

সবকিছুর মধ্যে শুক্রবারেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলার অভিযোগ এনেছে ইউক্রেন। দেশটির বিভিন্ন ওয়েবসাইট লক্ষ্য করে হামলাগুলো চালানো হয়। যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেশির ভাগ ওয়েবসাইট উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইউক্রেনের এমন অভিযোগের জবাব দিতে এখনো মুখ খোলেনি রাশিয়া।

২০১৪ সালে এক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে উত্খাত হয় তত্কালীন ইউক্রেন সরকার। ওই সরকার পশ্চিমাবিরোধী এবং রাশিয়ার পক্ষে ছিল। ইউক্রেনের রুশপন্থী সরকারের পতনের পর দেশটির অধীনে থাকা ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এ ছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেয় রাশিয়া। এসব ঘটনায় ১৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।