ইউক্রেনে যুদ্ধ হলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি

ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্ব মুখোমুখি অবস্থানে। দুই পক্ষই সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত যদি এই যুদ্ধ বেধেই যায়, তাহলে তাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। এতে বিশ্ব মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। নোবেল পুরস্কারজয়ী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উয়েপন্সের (আইসিএএন) প্রধান বিট্রিস ফিন এই সতর্কতা প্রকাশ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে বিট্রিস ফিন বলেন, যেকোনো সংঘাতে যদি এক বা একাধিক পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ যুক্ত থাকে, তাহলে সেই সংঘাত চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে ব্যাপক সেনা ও সামরিক শক্তি জড়ো করেছে। পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ, ইউক্রেন দখল করতেই মস্কোর এই সেনা সমাবেশ। তবে রাশিয়া এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়াকে মোকাবিলার ঘোষণাও দিয়েছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে আর সেখানেই ভয়ের জায়গা।

পরিস্থিতি শান্ত করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ফিন বলেছেন, এটা করা না হলে দ্রুতই নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন যে পরিস্থিতি ভয়ংকর খারাপের দিকে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, শুধু রাশিয়া সীমান্তেই নয়, ইউরোপজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে। যুদ্ধ যদি পূর্ণমাত্রায় বেধে যায়, তাহলে এসব অস্ত্র সংঘাতের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।

ইউক্রেনে রুশ হামলা হতে পারে ফেব্রুয়ারিতে: বাইডেন

আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে ‘স্পষ্ট আশঙ্কা’র কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এসব কথা জানানো হয়েছে। এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার একটি উন্মুক্ত বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউক্রেন সংকট নিয়ে সম্প্রতি আলোচনায় বসেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইউক্রেনকে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য করা হবে না—যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এ প্রতিশ্রুতি চায় রাশিয়া। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ দাবি নাকচ করেন। ওই দিনই রাশিয়া বলে, সংকট সমাধানের আশা কম। তবে আলোচনার দরজা খোলা আছে।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের দাবি নাকচ করে দেওয়ার পরও রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেন, এখনো আলোচনা করে সংকট নিরসন সম্ভব। তবে এর মধ্যে জো বাইডেন স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো শিগগির ইউক্রেনে সামরিক হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে সেনাবাহিনীকে সবুজ সংকেত দেবেন।

হোয়াইট হাউস বলছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে বাইডেনের এই মন্তব্যে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এমিলি হরনে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর “স্পষ্ট আশঙ্কা” রয়েছে। তিনি এটা প্রকাশ্যে বলেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস ধরে আমরা নিজেরাও সতর্ক করে আসছিলাম।’