উড়ন্ত গাড়ির ওড়ার অনুমতি
প্রচণ্ড যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা সড়কেই। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করেন, যদি উড়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যেত, তাহলে এত কষ্ট আর করতে হতো না। হয়তো সেই কথা ভেবেই এমন গাড়ি নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যেটি সড়কের চলার পাশাপাশি উড়োজাহাজের মতো উড়তেও পারবে প্রয়োজনের তাগিদে।
ইউরোপের দেশ স্লোভাকিয়ার হাইব্রিড গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্লেইন ভিশন ‘এয়ারকার’ নামের উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করেছে কিছুদিন আগে। এই গাড়িটি চলার পথে একটি ছোট উড়োজাহাজে রূপান্তর করা যাবে। গাড়ি ও উড়োজাহাজের ডুয়েল মুড ব্যবস্থা রয়েছে এই গাড়িতে। স্লোভাকিয়ায় ফ্লাইট পরীক্ষায় পাসও করেছে গাড়িটি। ফলে চলাচলের জন্য আর কোনো বাধা রইল না গাড়িটির।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্লেইন ভিশন বলেছে, পরীক্ষার অংশ হিসেবে টানা ৭০ ঘণ্টা উড়েছে গাড়িটি। এরপরই স্লোভাকিয়া ট্রান্সপোর্ট অথরিটি গাড়িটিকে আকাশে ওড়ার যোগ্য বলে সনদ দেয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ওই পরীক্ষার অংশ হিসেবে দুই শতাধিকবার আকাশে ওড়া ও অবতরণ করতে হয়েছে এয়ারকারকে, যা ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) পরিচালিত পরীক্ষার সমান। আকাশে ওড়ার এই পরীক্ষায় পূর্ণমাত্রার ফ্লাইটও অন্তর্ভুক্ত ছিল। সাধারণ উড়োজাহাজ যেসব কৌশল আকাশে দেখাতে পারে, সেটাও করতে হয়েছে এয়ারকারকে।
ক্লেইন ভিশনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই হাইব্রিড গাড়িটি চালাতে হলে পাইলটের সনদ লাগবে। তাঁরা আশা প্রকাশ করছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এয়ারকার বাজারজাত করা হবে। তবে বাণিজ্যিকভাবে কাজ শুরুর আগে ইএএসএর অনুমতি লাগবে।
ক্লেইন ভিশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা আন্তন জাজাক বলেছেন, আটজন বিশেষজ্ঞদের একটি দল এক লাখ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গবেষণা করে এই গাড়িটি নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এয়ারকার বিএমডব্লিউ ইঞ্জিনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি জ্বালানিতে চলে। ফলে যেকোনো গ্যাস স্টেশন থেকে এর জ্বালানি কেনা যাবে এবং ব্যবহার করা যাবে। এই যানটি সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে চলাচল করতে পারবে।
গত জুনে এয়ারকারটি পরীক্ষামূলকভাবে ৩৫ মিনিট ধরে আকাশে ওড়ে। এ সময় যানটি স্লোভাকিয়ার নিত্রা বিমানবন্দর থেকে রাজধানী ব্রাতিস্লাভা বিমানবন্দরে পৌঁছায়।