কূটনীতির মাধ্যমে যুদ্ধ সমাপ্তির আশা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কূটনীতির মাধ্যমেই সমাপ্তির আশা করছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে শান্তি আলোচনায় বসার আগে ইউক্রেনীয়দের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে বলে মনে করছেন ন্যাটো প্রধান ও মার্কিন কর্মকর্তারা। এ জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের অবস্থান শক্তিশালী করার ওপর মত দিচ্ছেন অনেকে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, আজ শুক্রবার এই যুদ্ধের ১০০ দিন। এর আগে গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। সেখানে তাঁরা বলেন, ভবিষ্যতের আলোচনা কেমন হবে, তা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি প্রভাবিত করবে। তার মানে, যুদ্ধক্ষেত্রে শক্ত অবস্থান ধরে রাখলে ইউক্রেনের জন্য দেনদরবার করা সহজ হবে।
ন্যাটো প্রধান স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘যুদ্ধের বিষয়ে অনুমান করা যায় না। আমরা আগ্রাসনের পূর্বাভাস দিতে পেরেছিলাম। কিন্তু এই যুদ্ধে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা অনুমান করা কঠিন। আমরা যা জানি, তা হলো প্রায় সব যুদ্ধই কোনো না কোনো পর্যায়ে আলোচনার টেবিলে শেষ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করছে ন্যাটো। তা ছাড়া মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে কিয়েভের নেতৃত্বের নিজস্ব সিদ্ধান্তের প্রতি জোটের আস্থা রয়েছে।
স্টলটেনবার্গের কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যা করছি, তা হলো এই আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেতে ইউক্রেনীয়দের হাতে যা দরকার, তা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া আলোচনার টেবিলে আসার জন্য ইউক্রেনের হাত শক্তিশালী করা।’
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘সংঘাতের গতিপথ বা কখন এটি শেষ হবে, তা অনুমান করা কঠিন। আমরা বলতে পারি না কখন বা কীভাবে যুদ্ধ শেষ হবে।’
এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এর আগে এক মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা জড়ো করে রাখে দেশটি। সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোতে ন্যাটো সম্প্রসারণ বন্ধ করার জন্যই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলা চালান বলে মনে করা হয়। প্রথমে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের কথা বললেও পরে রাশিয়া জানায়, তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দনবাসকে মুক্ত করবে ইউক্রেনের বাহিনী থেকে।
রাশিয়া ইতিমধ্যে জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে তাদের শর্ত হলো, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
এদিকে রাশিয়ার ভয়ে প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে। বুধবার ফিনিশরা গণভোটে ন্যাটোতে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। তবে ইউরোপের ওই দুই দেশকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তিতে বিরোধিতা করছে তুরস্ক। দেশটির অভিযোগ, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সন্ত্রাসীদের ‘নিরাপদ আশ্রয়’ দিয়েছে। রাশিয়াও এর ঘোর বিরোধী। তবে স্টলটেনবার্গ বলেন, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখেছেন। আঙ্কারার উদ্বেগগুলো নিরসনে তিনি কাজ করছেন।