দুই ডোজ টিকা নিলে যুক্তরাজ্যে বিশেষ সুবিধা

পর্যটন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্রিটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছ। তবে তারা আরও সুবিধা চাইছে।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের দেশে ফেরা আরও খানিকটা সহজ হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাঁরা টিকার দুই ডোজই নিয়েছেন, ইংল্যান্ডে ফিরে তাঁদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। তবে এই সুযোগ সব দেশ থেকে ফেরা ব্রিটিশ নাগরিকেরা পাবেন না। যেসব দেশ ব্রিটিশ সরকারের হলুদ তালিকায় (অ্যাম্বার লিস্ট) রয়েছে, সেই সব দেশ থেকে ফেরা ব্রিটিশ নাগরিকেরা এই সুবিধা পাবেন।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সরকার জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১৯ জুলাই থেকে। ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস এসব তথ্য পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতাদের কাছে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, কোনো ব্রিটিশ নাগরিক যদি অ্যাম্বার তালিকাভুক্ত দেশ থেকে ফিরতে চান, তবে আগের মতোই যাত্রা শুরুর আগে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া ফেরার পরও ওই নাগরিককে পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু আইসোলেশনে থাকতে হবে না।

ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, ইতালি, মালয়েশিয়া, আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়ামসহ বেশ কয়েকটি দেশ হলুদ তালিকায় রয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ডেলটা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল জুনের শেষ দিকে সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া থেকে পিছিয়ে যাওয়া। নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে, ১৯ জুলাই থেকে দেশটিতে সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ ছাড়া সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা প্রাপ্তির বয়স সীমা কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়। কিন্তু ১৮ বছরের কম বয়সীরাও বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরছে। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না।

করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর থেকেই ইউরোপের পর্যটন খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাজ্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। এ ছাড়া ভ্রমণের জন্য উপযোগী দেশের তালিকা প্রকাশ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। এই তালিকা অনুসারে যেসব দেশ পূর্ণ নিরাপদ, তাদের রাখা হয়েছিল সবুজ তালিকায়। যারা খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো ছিল হলুদ তালিকায়। আর যেসব দেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, সেগুলো ছিল লাল তালিকায়। কিন্তু পর্যটন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এসব বিধিনিষেধ শিথিলে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত আসার পর খুশি তারা। নতুন এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে তারা। কারণ, আগের নিয়ম অনুসারে, লাল কিংবা হলুদ তালিকায় থাকা দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে গেলে তার অবশ্যই ১০ দিন আইসোলেশনে থাকতে হতো।

তবে এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আরও কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাঁরা দেশে ফিরছেন, তাঁরা যদি ১৪ দিন আগে এই টিকা নিয়ে থাকেন, তবে এই সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

শুধু ইংল্যান্ড নয় যুক্তরাজ্যের অন্য অঞ্চলগুলোও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে বলা জানা গেছে। নর্দান আয়ারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ২৬ জুলাই থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে। আর ওয়েলস বলেছে, তারাও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে। তবে কবে থেকে সেখানে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তা এখনো জানানো হয়নি।