ছবি: টুইটার ও ফেসবুক

এক সপ্তাহ আগে সংবাদমাধ্যম জিরো হেজের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ তোলেন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এরপর আরেক সংবাদমাধ্যম এএসবি মিলিটারি একই ধরনের অভিযোগের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। স্পুতনিকের খবরে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। আর এই উত্তেজনা সামরিক সীমার বাইরেও চলছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ভিন্নমতধারার সংবাদ বা তথ্যের উৎসগুলোকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেছে।
লন্ডনের রাজনীতিকেরা ব্রিটিশ এয়ারওয়েভসে রাশিয়া টুডেকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। ব্রাসেলসে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটির এডিটর ইন চিফের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার এএসবি মিলিটারি নিউজের টুইটারের অ্যাকাউন্ট ১২ ঘণ্টা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এএসবি মিলিটারি নিউজের বিরুদ্ধে নিয়ম না মানার অভিযোগ তোলে টুইটার। তবে কী নিয়ম মানা হয়নি, তা সুনির্দিষ্ট করে জানায়নি টুইটার। এএসবি মিলিটারি অর্ধেক দিন তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভিন্নমত দমনের যে প্রচেষ্টা চলছে, তার অংশ হিসেবেই এমনটা করেছে টুইটার।

এএসবি মিলিটারি নিজেদের পশ্চিম ইউরোপের ও উত্তর আমেরিকা থেকে আসা একটি দল হিসেবে পরিচয় দেয়। এই দলে থাকা সংবাদকর্মীরা নিজেদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। এএসবি মিলিটারি বলেছে, দুই বছর আগে তারা একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে। এএসবি মিলিটারির অভিযোগ, পশ্চিমা গণমাধ্যম ভুয়া তথ্য প্রচার করছে। সাধারণ জনগণকে এমনভাবে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে প্রভাবিত করা হচ্ছে, যাতে তারা পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতি সমর্থন করে। এএসবি মিলিটারির দাবি, এসব কারণে পশ্চিমা প্রচারণার বিরুদ্ধে তারা কাজ শুরু করেছে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলার পরে দুই বছরের মধ্যে এএসবি মিলিটারির ফলোয়ারের সংখ্যা ৬৬ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভিডিও সরবরাহ করে এএসবি মিলিটারি। জোরালো সামরিক প্রতিবেদনের জন্য খ্যাতি রয়েছে এএসবি মিলিটারির।

এএসবি মিলিটারি বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানোর পর গত মঙ্গলবার একটি টুইট করে তারা। ওই টুইটে ইইউর নিষেধাজ্ঞার এই আহ্বান নিয়ে মজা করে এএসবি মিলিটারি। এরপর বিষয়টি নিয়ে সবাই মজা করতে শুরু করায় বরেল তাঁর টুইট মুছে ফেলেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরে এএসবির টুইটার ১২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এএসবি মিলিটারি গ্রুপ বলছে, একইভাবে ভিন্নমতের মাধ্যম সাউথ ফ্রন্টকে টুইটার, ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ন্যাটোর সঙ্গে যুক্ত থিঙ্কট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাব বলছে, ফেসবুক ইউক্রেনে রাশিয়া–সমর্থিত মাধ্যমগুলোর অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দিয়েছে।

এএসবি মিলিটারির কর্মীরা বলছেন, সাউথ ফ্রন্টও পশ্চিমা মাধ্যমের একতরফা তথ্য নিয়ে তাদের মতো প্রশ্ন তোলে। কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে মাত্র এক রাতের মধ্যে সাউথ ফ্রন্টের সব অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এএসবি মিলিটারি বলছে, প্রত্যেকেরই ভিন্নমত শোনার অধিকার রয়েছে। এটাই তথ্য স্বাধীনতা ও বাক্‌স্বাধীনতা। এএসবি সব সময় ভিন্নমত, যা দমিয়ে রাখা হয়, তা প্রচার করে যাবে। টুইটার সেটা রাখুক বা না রাখুক; প্রয়োজনে অন্য কোথাও এএসবি তা প্রচার করবে।