ম্যার্কেলের দলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে একসময়ের সঙ্গী

জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা
ছবি: রয়টার্স

এক যুগের বেশি সময় দাপটের সঙ্গে দেশ চালিয়েছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। ম্যার্কেলবিহীন নির্বাচনে, তাঁর ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলটি এখন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কি না, এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়ছে। ম্যার্কেলের দল এখন পর্যন্ত পেয়েছে ২৫ শতাংশ ভোট। আর গত আট বছর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারের জোটে থাকা সামাজিক গণতন্ত্রী দলটিও পেয়েছে ২৫ শতাংশ ভোট। হিসেব বলছে, আগামী চার বছরের জন্য সরকার গঠন করতে এই দুই দলকেই নিজেদের জোটসঙ্গী খুঁজতে হবে।

ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দল ও সামাজিক গণতন্ত্রী দল দুটি ২৫ শতাংশ করে ভোট পেলেও তৃতীয় শক্তি হিসেবে ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে পরিবেশবাদী সবুজ দল।

নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ম্যার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলটি চার বছর আগের নির্বাচনের তুলনায় ৭ শতাংশ কম ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে সামাজিক গণতন্ত্রী দলটি প্রায় ৫ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে এবং পরিবেশবাদী সবুজ দল ৬ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে। তবে নির্বাচনের পুরো ফলাফল জানতে আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

৭৩০ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দল পেয়েছে ২০০ আসন, সামাজিক গণতন্ত্রী দল ১৯৭ আসন, পরিবেশবাদী সবুজ দল ১১৯ আসন, লিবারেল গণতান্ত্রিক দল ৮৭, কট্টরবাদী এএফডি বা জার্মানির জন্য বিকল্প দলটি ৮৭ এবং বাম দল পেয়েছে ৩৯ আসন।

৮ কোটি মানুষের দেশ জার্মানিতে ভোটার প্রায় ৬ কোটি ৪ লাখ। নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১ লাখ। আর পুরুষ ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি লাখ। এবারের নির্বাচনে ৪৭টি দল ৬ হাজার ২১১ জন প্রার্থী দিয়েছে। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার। স্থানীয় সময় আজ সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লাইন দেখা গেছে। করোনা মহামারির নিষেধাজ্ঞার কারণে ভোট দিতে আসা মানুষের লাইন লম্বা হয়েছে।

জার্মানিতে ১৯৪৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক প্রথায় নির্বাচন হচ্ছে। এটি জার্মানির ২০তম জাতীয় নির্বাচন। জার্মানির রাজনীতিতে সরকার গঠনের ঐতিহ্য হলো, জোট বেঁধে সরকার গঠন। কারণ, সরকার গঠনের মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট কোনো দলই পায় না। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটছে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই সরকার গঠন করতে গেলে জোট বাঁধা ছাড়া বিকল্প থাকছে না।

আজকের নির্বাচনে ম্যার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দল থেকে চ্যান্সেলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, বর্তমানে দলটির সভাপতি ও জার্মানির জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন ভেস্টফালিয়ার মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট। জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম দল সামাজিক গণতন্ত্রী দলটি থেকে চ্যান্সেলর পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন ৬২ বছর বয়সী বর্তমান জোট সরকারের অর্থমন্ত্রী ওলাফ শোলৎস। আর জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দল থেকে চ্যান্সেলর পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে হ্যানোভারে ৪০ বছর বয়সী নারী অ্যানালেনা বেয়ারবককে।