তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যু ৫০ হাজার ছাড়াল, বাড়ি পুনর্গঠনের কাজ শুরু
শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়িগুলো পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেছে তুরস্ক। গতকাল শুক্রবার দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে গতকাল রাত নাগাদ ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ২১৮–এ দাঁড়িয়েছে। আর সিরিয়ার দেওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে নিহত মানুষের সংখ্যা ৫ হাজার ৯১৪। দুই দেশ মিলে ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।
ভূমিকম্পে ধসে পড়া কিংবা মারাত্মক রকমে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভবনের সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। এগুলোতে ৫ লাখ ২০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এক বছরের মধ্যে ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত, বাড়ি নির্মাণে তাড়াহুড়া না করে নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া। ভূমিকম্প সহনীয় বলে দাবি করা কিছু ভবনও এবারের ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, কয়েকটি প্রকল্পের জন্য টেন্ডার ও চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এগোচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে কোনো আপস হবে না।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘরহারা মানুষের জন্য তাঁবু দেওয়া হচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ, এগুলো পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। তেমনই একজন ৬৭ বছর বয়সী মেলেক। হাসসা শহরে একটি স্কুলের সামনে সহায়তার জন্য অপেক্ষায় থাকা এই ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমার আট সন্তান। আমরা একটি তাঁবুতে থাকছি। তাঁবুর ওপর থেকে পানি পড়ে। মেঝের অংশ স্যাঁতসেঁতে। আমরা আরও তাঁবু চাইছি। তারা আমাদের তা দিচ্ছে না।’
ইন্টাররেল টার্কি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসসা শহরের ওই স্কুলটিকে সহায়তা বিতরণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সুমিয়ি কারাবোচেক নামের এক স্বেচ্ছাসেবী বলেন, তাঁবুর ঘাটতি সবচেয়ে বড় সমস্যা।
তুরস্ক কিছু নতুন বিধিমালাও জারি করেছে। এসব বিধির আওতায় বিভিন্ন কোম্পানি এবং দাতব্য সংস্থাগুলো অসহায় মানুষদের দেওয়ার জন্য নগরায়ণ মন্ত্রণালয়কে ঘরবাড়ি ও কর্মস্থল নির্মাণ করে দিতে পারে।