আবার 'জনতা পরিবার'
মোদি-রথ রুখতে পুরোনো জনতা পরিবার ও সমাজতন্ত্রীরা একজোট হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিং যাদবের বাড়িতে এক বৈঠকে লালু প্রসাদ, নীতিশ কুমার, দেব গৌড়, শারদ যাদবদের মতো শীর্ষ নেতারা এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নতুন দলের সম্ভাব্য নাম সমাজবাদী জনতা দল।
মুলায়ম সিংকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন দলের গঠনতন্ত্র, নীতি ও কর্মসূচি ঠিক করার। আপাতত ঠিক হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর দিল্লিতে কালোটাকা, কৃষকদের দুরবস্থা এবং বেকার সমস্যা নিয়ে পাঁচ দলের নেতারা সমাবেশ করবেন।
যে পাঁচ আঞ্চলিক দল একজোট হয়ে নতুন দল গড়তে চলেছে তারা হলো: মুলায়মের সমাজবাদী পার্টি (এসপি), লালু প্রসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), নীতিশ-শারদের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ), দেব গৌড়র ধর্মনিরপেক্ষ জনতা দল (জেডিএস) ও ওমপ্রকাশ চৌতালার ভারতীয় জাতীয় লোকদল (আইএনএলডি)। বৈঠকের পর নীতিশ ও লালু প্রসাদ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে আমরা সবাই একজোট হয়ে নতুন দল গঠনের কথা ভেবেছি। মুলায়মকে একীকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের দলগুলোর আদর্শ ও নীতিও এক।’
যে দলগুলো মিলে নতুন দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি তাদের কোণঠাসা করে রেখেছে। মুলায়ম বুঝেছেন, উত্তর প্রদেশে মোদির মোকাবিলা কতটা কঠিন। লালু ও নীতিশ বুঝতে পারছেন, এখনই এক না হলে আগামী বছর বিহারের বিধানসভা ভোটে বিজেপির মোকাবিলা করা কঠিন হবে। মোদি-ঝড়ে হরিয়ানায় চৌতালার লোকদল উড়ে গেছে। কর্ণাটকে দেব গৌড়র দলকেও করতে হচ্ছে মোদি-হাওয়ার মোকাবিলা। কাজেই পুরোনো সমাজবাদী নেতারা ঠিক করেছেন, মোদির মোকাবিলা তাঁরা একযোগে করবেন। সে জন্যই নতুন দল গড়া।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মোকাবিলায় জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের পর এই সমাজবাদীরাই একজোট হয়ে জনতা দলের জন্ম দিয়েছিলেন।
নীতিশ কুমার বৈঠকে বলেন, নির্বাচনী সমঝোতায় লাভ হয় না। সব দল মিশে একটি দল গড়লে সারা দেশে অন্যরকম বার্তা যায়।
নতুন দল গড়ার এই তাগিদের পেছনে আর একটি কারণও রয়েছে। মুলায়মের ছোট ভাইয়ের ছেলের সঙ্গে লালু প্রসাদের ছোট মেয়ের বিয়ের ঠিক হয়েছে। দুই যাদব অধিপতির এই পারিবারিক মেলবন্ধন রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে একটা বড় ভূমিকা নিয়েছে।