ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় ছিল কলকাতার প্রাণকেন্দ্র বিবাদী বাগের লাল বাড়ি বা রাইটার্স বিল্ডিং। ২০১১ সালে মমতা ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসেন। এরপর রাইটার্স বিল্ডিংয়ের রাজ্য সচিবালয় সরিয়ে হাওড়ার শিবপুরের মন্দিরতলা এলাকায় এইচআরবিসি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয় ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর। ভবনের নাম দেওয়া হয় নবান্ন। মমতা এইচআরবিসি ভবনকে নীল-সাদা ভবনে রূপ দেন। বাম ফ্রন্ট আমলে ১৪তলা এ ভবন তৈরি হয়েছিল পোশাক পার্ক গড়ার জন্য।
রাইটার্স বিল্ডিং মেরামত করার জন্য নবান্নে স্থানান্তর করা হয়েছিল সচিবালয়। আমরা ক্ষমতায় এলে রাইটার্স, নবান্ন এবং নিউ সেক্রেটারিয়েট—এই তিনটি বাড়ি ভাগ করে রাজ্য সচিবালয় হিসেবে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করব।সুজন চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সিপিএম নেতা ও বিদায়ী বিধায়ক
এদিকে শমীক ভট্টাচার্যের ঘোষণাকে অলীক বলে মন্তব্য করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র সৌগত রায় বলেছেন, আগে বিজেপি ভোটে জিতুক। তারপর এসব পরিকল্পনা করুক। বিজেপি তো ভোটে জিততে পারবে না। তাই অলীক স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। শমীক অবশ্য এ কথাও বলেছেন, বাঙালির মন এখনো ছুঁয়ে আছে ঐতিহাসিক ওই লাল বাড়ি রাইটার্স বিল্ডিংয়ের দিকে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকেই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে আছে লাল বাড়িটি। রাজ্যের বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী এই বাড়ি। বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দেশ-বিদেশের নেতার পদধূলি পড়েছে এই লাল বাড়িতে। সর্বশেষ সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনও এসেছিলেন রাইটার্স বিল্ডিংয়ে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সিপিএম নেতা ও বিদায়ী বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘রাইটার্স বিল্ডিং মেরামত করার জন্য নবান্নে স্থানান্তর করা হয়েছিল সচিবালয়। আমরা ক্ষমতায় এলে রাইটার্স, নবান্ন এবং নিউ সেক্রেটারিয়েট—এই তিনটি বাড়ি ভাগ করে রাজ্য সচিবালয় হিসেবে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করব।’
ব্রিটিশ ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে কর্মরত করণিক বা রাইটার্সদের জন্য ১৬৩০ সালে তৈরি করা হয়েছিল এই বাড়ি। ১৬৯৫ সালের ২৫ জুন বাড়িটিকে ঘোষণা করা হয়েছিল রাইটার্স বিল্ডিং হিসেবে। ২ দশমিক ৮ একর জমির ওপর প্রথম নির্মিত হয়েছিল ভবনটি। এখন পরিধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ একরে। সবশেষ এখানে ছয় হাজার কর্মী কাজ করতেন।
এ বাড়ির প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার আগে এ বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ, বিধানচন্দ্র রায়, প্রফুল্ল চন্দ্র সেন, অজয় কুমার মুখার্জি, সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, জ্যোতিবসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।