ছাড়পত্র পেল না ভারতের কোভ্যাক্সিন, আরও তথ্য চায় ডব্লিউএইচও
জরুরি ব্যবহারের জন্য ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা কোভ্যাক্সিনকে এখনই ছাড়পত্র দিতে রাজি নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই টিকা ব্যবহার করা হলে তার ঝুঁকি কিংবা লাভ কতটুকু, তার ‘চূড়ান্ত পর্যালোচনা’ করতে চায় তারা। এ জন্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিটির কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি পরামর্শক দলের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত পর্যালোচনার জন্য আগামী ৩ নভেম্বর আবারও বৈঠক করবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি পরামর্শক দল।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির সঙ্গে যৌথভাবে কোভ্যাক্সিন উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক। ভারতে করোনার টিকা কার্যক্রমের শুরু থেকেই সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের পাশাপাশি ভারত বায়োটেকের এই টিকা ব্যবহার হয়ে আসছে। ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, ইরান, ফিলিপাইন, মেক্সিকোসহ ১৬টি দেশ জরুরি প্রয়োজনে ভারত বায়োটেকের উৎপাদিত করোনার এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো এই টিকার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়নি। প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত বায়োটেক।
আজ বুধবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকার যে তালিকা (ইইউএল) তৈরি করেছে, সেখানে অন্তর্ভুক্ত হতে চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত বায়োটেক। এর অংশ হিসেবে গত ১৯ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে আগ্রহ প্রদর্শনমূলক চিঠি (ইওআই) দেয় বায়োটেক। কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা পর্যালোচনায় গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি পরামর্শক দল বৈঠক করে।
ই–মেইলে ভারতীয় একটি বার্তা সংস্থার প্রশ্নের জবাবে ডব্লিউএইচও জানায়, ‘আজ (২৬ অক্টোবর) কারিগরি পরামর্শক দল বৈঠক করেছে। তারা মনে করছে, বৈশ্বিকভাবে এই টিকা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার আগে এর জরুরি ব্যবহারসংক্রান্ত ঝুঁকি কিংবা সুবিধার চূড়ান্ত পর্যালোচনা প্রয়োজন। পরামর্শক দল প্রত্যাশা করছে, এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ প্রস্তুতকারী কোম্পানির কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। আর আগামী ৩ নভেম্বর বুধবার ঝুঁকি-সুবিধাসংক্রান্ত চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য আবারও বৈঠক করবে তারা।’
এর আগে মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস আভাস দিয়েছিলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে এবং পরামর্শক কমিটি সন্তুষ্ট হলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কোভ্যাক্সিন জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পেতে পারে।
আর গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, জরুরি ভিত্তিতে কোনো টিকাকে সুপারিশ করার আগে এক শ ভাগ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
ভারত বায়োটেকের দাবি, উপসর্গযুক্ত করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় কোভ্যাক্সিন ৭৭ দশিমক ৮ শতাংশ কার্যকর এবং নতুন ডেলটা ধরন রুখতে কোভ্যাক্সিন ৬৫ দশিমক ২ শতাংশ কার্যকর। গত জুন মাসে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই দাবি করে কোম্পানিটি৷