জ্ঞানবাপি মসজিদ নিয়ে পোস্ট: দিল্লির অধ্যাপক পেলেন জামিন

রতন লাল
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক রতন লালকে জামিন দিয়েছেন আদালত। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার দিল্লির একটি আদালতে জামিন লাভ করেন তিনি। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাতে জ্ঞানবাপি মসজিদ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার পর সহযোগী অধ্যাপক রতন লালকে গ্রেপ্তার করা হয়। বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদ প্রাঙ্গণে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন রতন। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মকে ভিত্তি করে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শনিবার নয়া দিল্লির তিস হাজারি আদালতে রতন লালকে হাজির করা হয়। পরে তাঁকে ৫০ হাজার রুপির বন্ড ও মুচলেকায় সই নিয়ে জামিন দেওয়া হয়। ‘শিবলিঙ্গ’ বিতর্ক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ধরনের পোস্ট বা সাক্ষাৎকার দেওয়া থেকে বিরত থাকতে রতন লালকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রতন লালের বিরুদ্ধে এফআইআরটি করা হয় গত মঙ্গলবার রাতে। ভিনিত জিন্দাল নামের দিল্লিভিত্তিক এক আইনজীবী পুলিশকে অভিযোগ করার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জিন্দাল অভিযোগ করেন, রতন লাল সম্প্রতি ‘শিবলিঙ্গ নিয়ে একটি অবমাননাকর, উসকানি ও উত্তেজনামূলক টুইট’ শেয়ার করেছেন। তিনি আরও বলেন, ইস্যুটি খুব স্পর্শকাতর এবং তা আদালতের পর্যবেক্ষণে আছে।

রতন লালকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শনিবার বামপন্থী অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (এআইএসএ) কর্মীরা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আমাদের শিক্ষকদের আক্রমণ করা বন্ধ করুন, গণতান্ত্রিক কণ্ঠরোধ বন্ধ করুন, অধ্যাপক রতন লালকে ছেড়ে দিন।’

বিক্ষোভ চলার সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। গ্রেপ্তারের আগে নিজের টুইটার পোস্ট সম্পর্কে রতন লাল বলেন, ‘ভারতে আপনারা যদি কোনো কিছু নিয়ে কথা বলেন, তাহলে কোনো একজনের কিংবা অন্যদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে। সুতরাং এটি নতুন কিছু নয়। আমি একজন ইতিহাসবিদ এবং এ ব্যাপারে আমার বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। এ ব্যাপারে লিখতে গিয়ে আমি সতর্কভাবে ভাষা ব্যবহার করেছি। আমি নিজেই নিজের জন্য লড়ব।’

আরও পড়ুন

গত সপ্তাহে এক টুইটার পোস্টে রতন লাল বলেন, জ্ঞানবাপি মসজিদ ইস্যু নিয়ে টুইট করার পর তাঁর ২০ বছর বয়সী ছেলেকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি আম্বেদকারনামা নামের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা ও এডিটর ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রতন লাল। সংবাদমাধ্যমটি দলিত ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে থাকে।