ত্রিপুরায় সভা করা অনুমতি পেল না তৃণমূল

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আগরতলাজুড়ে গণযাত্রা ও পথসভা করার তৃণমূল কংগ্রেসের বুধবারের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। ত্রিপুরার পুলিশ গণযাত্রার অনুমতি দেয়নি।

শুধু বুধবারই নয়, তৃণমূলের আবেদনের ভিত্তিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবারও (১৬ সেপ্টেম্বর) সভা করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। তবে মঙ্গলবারই আবার চিঠি দিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর মিছিলের অনুমতি চেয়েছে তৃণমূল।

দিল্লিতে কয়লা কেলেঙ্কারিতে জেরা করার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২১ সেপ্টেম্বর ডেকে পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পরের দিনই সভা করার অনুমতি চেয়েছে তৃণমূল। তবে বুধবার অনুমতি না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট তৃণমূল।

মঙ্গলবার আগরতলায় সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন শুনে বিজেপি হোটেলে হোটেলে ঘুরে বলেছে এদের থাকতে দেবেন না। সাংবাদিক বৈঠক করতে দেবেন না। ভয় না পেলে কেউ এটা করে? এরা কাপুরুষ, মেরুদণ্ডহীন পার্টি।’

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘এই রাজ্যে দিনের পর দিন তৃণমূল সভা করার অনুমতি দেয়নি। এটা ওদের থেকেই শেখা।’

গত সোমবার পশ্চিম ত্রিপুরার মহকুমা প্রশাসক সুবল ভৌমিক বলেন, আগরতলা শহরে জনসভা করার জন্য ইতিমধ্যে অন্য একটি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঠিক যে রাস্তা দিয়ে তৃণমূলের মিছিল যাবে বলে জানানো হয়েছে, সেখানে গণসভা করবে ওই রাজনৈতিক দল। আইনশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে তৃণমূলকে সভা করার অনুমতি দেওয়া যাবে না।

১৬ সেপ্টেম্বর আবার সভা করার অনুমতি চায় তৃণমূল। সোমবার রাতে পুলিশ জানায়, এই সভার অনুমতিও দেওয়া যাবে না। প্রশাসকের বক্তব্য, ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে, কারণ পরের দিন (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্বকর্মা পূজা।
পরপর দুই দিন অনুমতি না পেয়ে ক্ষুব্ধ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘বিজেপি ভয়ে মরে যাচ্ছে। সে কারণেই বিজেপি-বিপ্লব তাঁর সব শক্তি প্রয়োগ করে আমায় ত্রিপুরায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন।

আপনারা চেষ্টা করে যান, আমায় আটকাতে পারবেন না। তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে আপনাদের ভয় থেকে এটা স্পষ্ট, সরকারে আপনাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে।’
তৃণমূল বলছে, আগরতলার উত্তরে ধর্মনগর স্টেশন যেখান থেকে অধিকাংশ ট্রেন ছাড়ে, সেখানেও ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর ধর্মঘট ডেকেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শ্রমিক শাখা ভারতীয় মজদুর সংঘ। ধর্মঘটের উদ্দেশ্য তৃণমূল সমর্থকদের আগরতলায় পৌঁছতে বাধা দেওয়া।

তৃণমূল কয়েক সপ্তাহ ধরে গণসংযোগ যাত্রার পরিকল্পনা করছিল। কলকাতা থেকে একাধিক নেতা-নেত্রী, এমএলএ-এমপিকে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আসামের বরাক উপত্যকার নেত্রী সুস্মিতা দেবকে প্রায় স্থায়ীভাবে আগরতলায় বসিয়ে রেখেছিল।
সুস্মিতাকে মঙ্গলবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুস্মিতা কিছুদিন আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন। মঙ্গলবার আগরতলার সাংবাদিক বৈঠকে সুস্মিতা দেব দাবি করেন, ত্রিপুরায় সিপিআইএম ও বিজেপির মধ্যে গোপন আঁতাত রয়েছে।