করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। করোনার অতি সংক্রামক ধরন অমিক্রন মোকাবিলাকে প্রাধান্য দিয়ে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বুধবার এই রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে ২ হাজার ১২৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পর করোনা মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়। এর অংশ হিসেবে কোনো এলাকায় একজনেরও অমিক্রন সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটলে, ওই এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৬টি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ২৩ হাজার ৯৪৭টি বেডকে করোনা বেড হিসেবে তৈরি রাখতে বলা হয়েছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অজয় চক্রবর্তী গতকাল বলেছেন, রাজ্যে ২০০টি সেফ হোম আবারও চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এসব সেফ হোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর করোনার প্রথম ঢেউয়ে সব থেকে বেশি সংক্রমিত হয়েছিল। ওই দিন এ রাজ্যে সংক্রমিত হন ৪ হাজার ১৫৭ জন। আর দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছিল ২০২১ সালের ১৪ মে। সংখ্যাটি ছিল ২০ হাজার ৮৪৬। এবার যেভাবে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, তাতে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে এক দিনে ৩০ থেকে ৩২ হাজার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে মনে করছেন করোনা বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে ২৮ ডিসেম্বর নাইজেরিয়াফেরত ৫২ বছর বয়সী এক ভারতীয় নাগরিক মারা গেছেন। তিনি মুম্বাইয়ের হাসপাতালে মারা যান। চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে তাঁর মৃত্যুর কারণ হৃদ্‌রোগ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে গতকাল ওই মৃতের এনআইভি রিপোর্ট আসার পর জানা যায়, তিনি অমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তি মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ছিলেন।

ইতিমধ্যে বিদেশ থেকে ফিরে আসা আরও পাঁচ ব্যক্তির শরীরে অমিক্রন ধরা পড়েছে। গতকাল কলকাতার আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষসহ ১৩ জন চিকিৎসকও করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।