পশ্চিমবঙ্গ বিধিনিষেধ শিথিল, বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার এখন কিছুটা নিম্নমুখী। এরপরও রাজ্যটিতে চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। চলবে আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত। তবে লকডাউন চললেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধিনিষেধ শিথিল করেছে রাজ্য সরকার।
আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সচিবালয় নবান্নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। রাজ্যটিতে চলমান লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ জুন। মমতা বলেন, করোনার সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় লকডাউন আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি–বেসরকারি অফিসগুলো ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে খুলতে পারবে। বেসরকারি অফিস চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত। তবে রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে বাস, ট্রেন ও মেট্রোরেল। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও জরুরি পরিষেবায় ট্যাক্সি ও অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গজুড়ে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত হাটবাজার খোলা রাখা যাবে। অন্য দোকানপাট খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। শপিং মল খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে সেখানে ঢুকতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ক্রেতা। বার ও রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
করোনার টিকা নেওয়া থাকলে সকালে প্রাতঃভ্রমণকারীদের পার্কে ঢোকার সুযোগ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা হতে পারে। তবে বন্ধ রাখতে হবে রাজ্যের সব সিনেমা হল, বিউটি পারলার, ব্যায়ামাগার, সুইমিং পুল, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও স্পা সেন্টার। চালু থাকবে হোম ডেলিভারি, অনলাইন পরিষেবা, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন। খোলা থাকবে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর দোকান।
এদিকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কলাকুশলী নিয়ে নাটক ও সিনেমার শুটিং করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। তবে তাঁদের অবশ্যই করোনার টিকা নেওয়া থাকতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩ হাজার ৫১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৭৮ জন। আর করোনাইন্ডিয়াট্র্যাকার বলছে, এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনার সর্বমোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৬১ হাজার ২৫৭। মৃতের মোট সংখ্যা ১৬ হাজার ৮৯৬।