বিজেপির পক্ষে কথা বলে বিপাকে মুকুল রায়

মুকুল রায়

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া মুকুল রায় সাবেক দল বিজেপির সুনাম করে বিপাকে পড়েছেন। তৃণমূলে যোগ দিয়েও তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর শহরে বিজেপি ‘স্বমহিমায়’ ফিরে আসবে। তৃণমূল ‘পর্যুদস্ত’ হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গত শুক্রবার কৃষ্ণনগরে এক সাংবাদ সন্মেলনে এসব কথা বলেন মুকুল রায়। তাঁর এমন মন্তব্যের ভিডিও রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে শুরু হয় আলোচনা–সমালোচনা।

কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে এবার কী হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার মুকুল রায় বলেন, ‘আমি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পক্ষ থেকে বলতে পারি, তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে। কৃষ্ণনগরে বিজেপি স্বমহিমায় ফিরে আসবে।’

মুকুল রায় এমন সময় এ মন্তব্য করলেন, যখন আগামীকাল সোমবারই তৃণমূল নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝাড়গ্রাম সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। সেখানের বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা রয়েছে তাঁদের।

এ ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়। গতকাল শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর মা কৃষ্ণা রায়ের মৃত্যু এবং রাজনৈতিক চাপে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন তাঁর বাবা। করোনায় থেকে সুস্থ হওয়ার পর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য তাঁর মাকে চেন্নাই নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের আগেই ৬ জুলাই মারা যান কৃষ্ণা রায়।

শুভ্রাংশু রায় বলেন, ‘এ ঘটনার পর বাবা অবসাদে ভুগতে থাকেন। অসংলগ্ন কথা বলেন। সাধারণ কথাও মনে রাখতে পারেন না। ফলে বাবা সেদিন ঠিকমতো কথা বলতে পারেননি।’

তবে নিজের শরীর সুস্থ আছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন মুকুল রায়। শনিবার সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, ‘যেটা হয়েছে, সেটা হওয়া উচিত নয়। একেবারেই ঠিক হয়নি।’

১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি মমতার নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারিগর ছিলেন মুকুল রায়। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। পরে মমতার সঙ্গে বনিবনা না হলে ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মুকুল রায় তৃণমূল ছাড়েন। সে বছরেই ৩ নভেম্বর বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। চলতি বছরের ১১ জুন বিজেপি ছেড়ে আবার পুরোনো দল তৃণমূলে ফিরে আসেন মুকুল।