মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ‘জড়িত’ থাকার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েক জন মুসলিম ব্যক্তির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আগে উত্তর প্রদেশের এসব বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানানো হয় বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। খবর বিবিসি।
সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার অবমাননকর মন্তব্যের পর মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভে সংঘর্ষ, সহিংসতা হয়েছে। দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের পুলিশ বিভিন্ন জেলা থেকে তিন শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত মে মাসে টেলিভিশনে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন নূপুর শর্মা। তিনি তখন বিজেপির মুখপাত্র ছিলেন। তাঁর ওই মন্তব্য আপত্তিকর হওয়ায় তা প্রকাশ করেনি বিবিসি। নূপুর শর্মার ওই মন্তব্যের পর দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠলে দল থেকে সাময়িকভাবে তাঁকে বরখাস্ত করে বিজেপি।
নূপুর শর্মার ওই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয় ভারতের মুসলিমরা। এ নিয়ে নিন্দা জানায় মুসলিম বিশ্বের এক ডজনের বেশি দেশ। এ ঘটনায় বিজেপির দিল্লি মিডিয়া ইউনিটের প্রধান নবীন কুমার জিন্দালকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের একটি স্ক্রিনশট টুইট করার কারণে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি।
বিজেপির এই দুই নেতা, বিশেষ করে নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবৈধ স্থাপনা এবং বিক্ষোভে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্তদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশে যাঁদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের একজন জাভেদ আহমেদ। তিনি একজন রাজনীতিক। তাঁর মেয়ে আফরিন ফাতিমা মুসলিম অধিকার নিয়ে কাজ করা একজন অধিকারকর্মী। গত শুক্রবার বিক্ষোভ পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠা আরও দুজনের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা একটি ছবি টুইট করেছেন। তাতে দেখা যায়, একটি বুলডোজার দিয়ে একটি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ছবিটি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘বিশৃঙ্খলকারীরা মনে রাখবেন, শুক্রবারের পরই আসে শনিবার।’ বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার এ ঘটনায় অনেকে নিন্দা জানাচ্ছেন।