মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা চ্যান্সেলর পদে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিলটি পাস হয়েছে। আজ সোমবার বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি সংশোধনী বিল-২০২২’ উত্থাপিত হয়। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১৮২টি, বিপক্ষে ভোট পড়ে ৪০টি। বর্তমানে রাজ্যের গভর্নর বা রাজ্যপাল সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।

এদিকে বিধানসভার ভোটাভুটির পর বিজেপি ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। দাবি করেছে, তাদের দলের ৫৭ জন বিধায়ক ভোট প্রদান করলেও ভোট পড়েছে ৪০ জনের। এই ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে শিগগিরই বিজেপি আদালতে যাবে।

গত ২৬ মে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্সেলর বা আচার্য পদে নিয়োগ করা হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। একই সঙ্গে রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটর বা পর্যবেক্ষক পদে বসানো হবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আর বিভিন্ন ক্যাটাগরির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩ হাজার ২৫৯।

ভারতের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তালিকায় রয়েছে এই রাজ্যের ৩৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপশি এই রাজ্যে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেটি শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেও অন্য সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে পদাধিকার বলে রাজ্যের গভর্নর বা রাজ্যপাল রয়েছেন।

বর্তমানে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতার বনিবনা না হলে রাজ্য চালানোর স্বার্থে রাজ্য সরকার রাজ্যপালকে সরিয়ে ওই পদে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেই লক্ষ্যে আজ পাস করানো হয় রাজ্যপালের পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিলটি।

গত সোমবার এই নতুন বিলকে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে অনুমতি দেওয়া হয়েছে বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যবেক্ষক পদে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর।

এদিকে অনেক ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষাবিদ এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। তাঁরা বলছেন, এতে করে শিক্ষাক্ষেত্রেও রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটবে। শিক্ষাব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। এভাবে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে নিজেকে আচার্য পদে বসাতে পারেন না। একই সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক পদেও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে বসাতে পারেন না। তাঁদের দাবি, এর ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে। নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হবে। শিক্ষাক্ষেত্র আরও কলুষিত হবে রাজনৈতিক প্রভাবে।

অনেকে বলছেন, সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পদক পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে সেরা শিক্ষাবিদ হিসেবে ভাবতে শুরু করেছেন।