ইরানে এক কুর্দির মৃত্যুদণ্ড, প্রতিবাদে বিরল বিক্ষোভ

আইআরজিসি–সংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে হেইদার গোরবানিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়
ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

আদালতের আদেশের বিরোধিতায় বিক্ষোভ হতে দেখা গেছে ইরানে। সম্প্রতি হেইদার গোরবানি নামে কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর প্রতিবাদে তাঁর বাড়ির সামনে সমবেত হন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। ইরানে এমন বিক্ষোভকে বিরল একটি ঘটনা বলছে বিবিসি।

কুর্দিস্তান প্রদেশের কামিয়ারান শহরে হেইদার গোরবানির বাড়ির বাইরে সমবেত ওই বিক্ষোভকারীদের হেইদারকে ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ৪৮ বছর বয়সী হেইদার গোরবানিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

তবে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন হেইদার। এদিকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক বন্দী।

হত্যা ছাড়া গোরবানিকে সরকারবিরোধী নির্বাসিত সশস্ত্রগোষ্ঠী ডেমোক্রেটিক পার্টি অব ইরানিয়ান কুর্দিস্তানের (পিডিকেআই) সদস্য হওয়ার দায়েও দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

ইরানের কুর্দি জনগোষ্ঠীর মানুষের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে পিডিআই নামের এ সশস্ত্রগোষ্ঠী।

গত রোববার ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সানান্দাজ কারাগারে গোরবানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার পর চলতি বছর ইরানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এর প্রতিবাদে একাধিক প্রচারাভিযান চালিয়েছিল।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর দাবি, নির্যাতন চালিয়ে জোর করে জবানবন্দির মাধ্যমে পাওয়া তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গোরবানিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তদন্তের সময় তাঁকে কোনো আইনজীবী দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বের গোরবানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার ও তাঁর মৃত্যুদণ্ড বাতিলের আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তেহরানের প্রতি তাঁর মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে নতুন করে স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানায়।

বিবিসি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে যে পরিমাণ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, সেই সংখ্যাটা চীন ছাড়া বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।

২০২০ সালে ইরানে অন্তত ২৪৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, রাজনৈতিক বিরোধী, বিক্ষোভকারী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের দমনে ইরানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।