ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ফিলিস্তিনি নিহত, আহত ১৫

গাজায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলাকালে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে একজন নারী
রয়টার্সের ফাইল ছবি

গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাতে সংঘর্ষে ১ ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ কথা জানায়। খবর এএফপি ও আল-জাজিরার।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া এলাকায় ওই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ২৬ বছর বয়সী ওই ফিলিস্তিনি যুবক। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।

সাম্প্রতিকতম সংঘর্ষের আগে গত মে মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিন ধরে লড়াই চলে। লড়াই চলাকালে গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

ঘটনাস্থল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপির সংবাদদাতারা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখান ফিলিস্তিনিরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে গাজার ওপর আরোপিত ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল ফিলিস্তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠী।

এর আগে গত ২১ আগস্ট ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সে সময় ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনীর একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে পরে মারা যান। গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসের তথ্য অনুযায়ী, ওই সংঘর্ষে শিশুসহ ৪০ জনের মতো ফিলিস্তিনি আহত হন।

গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া ও ইসরায়েলের দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিজেদের ফেরত যাওয়ার অধিকারের দাবিতে ২০১৮ সালেও বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন ফিলিস্তিনিরা। এবারের বিক্ষোভও ছিল অনুরূপ।

সাম্প্রতিকতম সংঘর্ষের আগে গত মে মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিন ধরে লড়াই চলে। লড়াই চলাকালে গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। গত কয়েক বছরের মধ্যে সেটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা। ইসরায়েলি হামলায় তখন অনেক ফিলিস্তিনি হতাহত হন। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বহু ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আপাত ওই সংঘাতে অবসান ঘটে।

মধ্যপ্রাচ্যে স্থবির শান্তিপ্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিতকরণে বৈঠক

স্থবির হয়ে পড়া মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত যুদ্ধবিরতি আরও জোরদার করার প্রচেষ্টায় কায়রোয় বৈঠক করেছেন মিসর, জর্ডান ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের নেতারা।

বৈঠকে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ইসরায়েলের দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অস্থিরতা দূর করতে ও আস্থা অর্জনে পদক্ষেপ নিতে তাঁরা প্রস্তুত রয়েছেন।

মাহমুদ আব্বাস ও জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিও। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সিসির কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

সংকট সমাধানে তিন নেতা একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তাঁরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার রয়েছে। তবে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল বরাবরই এমন পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছে।