জর্ডানের প্রিন্স হামজা অভ্যুত্থানের জন্য সৌদির ‘সহায়তা’ চাচ্ছিলেন
জর্ডানের প্রিন্স হামজা বিন হুসেন দেশটিতে অভ্যুত্থান সংঘটনের জন্য সৌদি আরবের সহায়তা আশা করছিলেন বলে আদালতের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ঘটনায় দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতের অভিযোগপত্র গতকাল রোববার প্রকাশ করা হয়। এই দুই আসামি হামজার সহযোগী ছিলেন বলে বলা হচ্ছে।
দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি আরবের সমর্থন নিয়ে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করার আশা করছিলেন প্রিন্স হামজা।
এই দুই আসামি হলেন জর্ডানের রাজকীয় আদালতের সাবেক প্রধান বাসেম আওদাল্লাহ ও দেশটির সাবেক বিশেষ দূত শরিফ হাসান বিন জায়েদ।
প্রতিবেশী সৌদি আরবের সঙ্গে উভয় আসামির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে খবরে বলা হয়। বাসেমের সৌদির নাগরিকত্ব আছে। তাঁকে সৌদি আরবের কার্যত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ মনে করা হয়। অন্যদিকে, শরিফ সৌদি আরবে জর্ডানের বিশেষ দূত ছিলেন।
বাসেম ও শরিফ উভয়ে জর্ডানের স্টেট সিকিউরিটি কোর্টে বিচারের মুখোমুখি। বিচারে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের সর্বোচ্চ ২০ বছর করে কারাদণ্ড হতে পারে।
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সৎভাই হামজা। গত এপ্রিলে জর্ডানকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে হামজার জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন হামজা।
অভিযোগের জেরে হামজাকে আর বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না। জর্ডানের কর্তৃপক্ষের পরে জানায়, হামজার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি রাজপরিবারের ভেতরেই পারিবারিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে।
জর্ডানকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে কোনোভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেছে সৌদি আরব।
গত এপ্রিলে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে খবর বের হওয়ার পর দ্রুতই জর্ডানের প্রতি সমর্থন জানায় সৌদি আরব। জর্ডানের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় দেশটির বাদশাহর নেওয়া পদক্ষেপের প্রতি সৌদি আরব তার সমর্থন ব্যক্ত করে।
এপ্রিলের শুরুর দিকে জর্ডানের উপপ্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি অভিযোগ করেন, জর্ডানকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশটির সাবেক ক্রাউন প্রিন্স হামজা বিদেশিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার কথাও জানান তিনি।
এর আগে হামজা দাবি করেছিলেন, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। পরে অবশ্য জর্ডানের রাজপরিবারের প্রতি হামজা ‘আনুগত্য’ প্রকাশ করেন।
২০০৪ সালে হামজাকে জর্ডানের ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মূলত, তারপর থেকেই রাজপরিবারের সঙ্গে তাঁর মতানৈক্যের শুরু। তিনি জর্ডানের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও হয়রানির অভিযোগ তুলে আসছিলেন।