কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে প্রথম আলো

প্রয়াত শিল্পপতি লতিফুর রহমান ও হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার সময় বন্ধুদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারানো তরুণ ফারাজ হোসেনকে স্মরণের মধ্য দিয়ে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন করেছে।

১ ডিসেম্বর রাতে তৃতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে সরাসরি যোগ দেন লেখক, সাংবাদিক ও প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক। নিউইয়র্কের টাইম টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশ থেকে সুধীজনেরা অংশ নেন। সবাই প্রবাসে বাংলা পত্রিকা হিসেবে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাফল্য কামনা করেন।আনিসুল হক বলেন, করোনা মহামারি থেকে শুরু করে মার্কিন নির্বাচন সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছেছে। সংবাদপত্র আজকের সময়ে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে সময় পাড়ি দিলেও প্রথম আলো ছাপা পত্রিকা ও অনলাইনে নেতৃত্বের ভূমিকায় রয়েছে। সারা বিশ্বে সংবাদপত্র পাঠকদের কাছে প্রথম আলোর এগিয়ে থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে নিরলস প্রয়াস ও সৃষ্টিশীলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে থাকার কাজ আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। যারা বিভিন্নভাবে এ কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী সবাইকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলেন বক্তারা। দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁর নিউইয়র্কে উপস্থিতি ও কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সভার কথা স্মরণ করেন তাঁরা। বক্তারা বলেন, বাংলা সংবাদপত্রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে ঐতিহাসিক কাজ করে মতিউর রহমান যে সাফল্য দেখিয়েছেন, সারা বিশ্বের বাংলাভাষীরা আজ সেই সাফল্যের গর্বিত অংশীদার।

অনুষ্ঠানে পেনসিলভানিয়া রাজ্য থেকে যোগ দেন মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ। তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার মধ্য দিয়ে প্রবাস থেকে আমরা বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের কথা তুলে ধরতে পারছি। দেশের পত্রিকায় প্রবাসের কিছু উল্লেখযোগ্য সংবাদ নিয়মিত প্রকাশ ও প্রচারের আহ্বান জানান তিনি।

স্থাপত্য প্রকৌশলী, লেখক আনোয়ার ইকবাল বলেন, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা প্রবাসে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।

অনুষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ট্রান্সফোটেকের সিইও শেখ গালিব রহমান বলেন, প্রতিটি কর্মে পরস্পরের সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। নারী নেত্রী সালমা ফেরদৌস বলেন, প্রথম আলো পত্রিকা নিউইয়র্কে শুধু একটি সংবাদপত্রই নয়, কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করার নিত্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও লেখক সুখেন গোমেজ বাংলাভাষী আগামী প্রজন্মের পত্রিকা হিসেবে প্রথম আলোকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন সাংবাদিক রওশন হক, কবি ও গীতিকার ইশতিয়াক রূপু, রোকেয়া দীপা, লেখক এইচবি রিতা, এম আর ফারজানা, রোমানা লেইস ও পলি শাহীনা, সাংবাদিক জাহিদা আলম, মনিজা রহমান, শাহ আহমদ, আসিফ মোক্তাদির ও রহমান মাহবুব, মিশিগান থেকে ফারজানা চৌধুরী প্রমুখ।

সাংবাদিকেরা নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও লকডাউন চালু হয়। করোনায় নিহত চেনা–জানা মানুষের স্মরণ করে বক্তারা বলেন, সমস্যা ও সংকটে নিউইয়র্কে প্রথম আলো এক পরিবারের মতো হয়ে উঠেছে। এ পরিবার প্রবাসীদের আনন্দ, বেদনার কথা বলে যাচ্ছে ও বলে যাবে।

বক্তারা মিডিয়া স্টারের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তিনি ২০১৭ সালে নিউইয়র্কে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণ প্রবাসীর কথা বলে যাবে। সাংবদকর্মীরা বলেন, আমরা তাঁর স্মৃতি ধারণ করে প্রবাসে তাঁর নীতি নৈতিকতাকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করে যাব।

অনুষ্ঠানে টাইম টেলিভিশন তাদের নিজস্ব সম্প্রচারের সময়টি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার জন্য ছেড়ে দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির সিইও আবু তাহেরকে ধন্যবাদ জানানো হয়। আবু তাহের বলেন, বাংলাদেশের মতো ভালো সাংবাদিকতার জন্য প্রথম আলো প্রবাসেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন বেনজির শিকদার ও কান্তা কাবির। অনুষ্ঠানের কবিতায়, আলাপে অন্যান্যের সঙ্গে যোগ দেন সিনিয়র সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, কবি শামস আল মবিন, আবৃতি শিল্পী শুক্লা রায়, কলামিস্ট আশরাফ আহমেদ, কবি সোনিয়া কাদের, কবি ও লেখক ফারুক ফয়সাল, কবি ও লেখক কাজী জহির, লেখক আবদুল্লাহ জাহিদ, রিমি রোম্মান, শাম্মি আক্তার, জেবুন্নেসা জ্যোৎস্না, লেখক কলামিস্ট ও কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মাসুম আহমেদ, অভিনেতা ও কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট সৈয়দ ফজলুর রহমান, আবৃতি শিল্পী তাহরিনা পারভিন, এম এ আহাদ, মনজুরুল হক, সানজিদা উর্মি, শাহ শিরিল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের নানাভাবে সহযোগিতা করার জন্য ট্রান্সফোটেক, স্টেলা প্রিন্টার্স, আদিবা সাজেদ, সৈয়দ উতবা, খলিল বিরিয়ানির মালিক খলিলুর রহমানসহ টাইম টেলিভিশনের কলা–কুশলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।