পাঁচ মাসে জন্ম নেওয়া শিশুটি এখন দিব্যি সুস্থ
কার্টিস মিনসের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে। তবে তার জন্ম আর দশটি শিশুর মতো হয়নি। মায়ের গর্ভে মাত্র পাঁচ মাস (২১ সপ্তাহ) কাটানোর পরই পৃথিবীর আলো দেখে কার্টিস। ওজন ছিল মাত্র ৪২০ গ্রাম। আর এ কারণেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খাতায় সবচেয়ে অপরিণত নবজাতক হিসেবে নাম উঠেছে তার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কার্টিসের জন্মের পর ১৬ মাস গড়িয়েছে। এখন সে বেশ সুস্থ আছে। সাধারণত গর্ভধারণের ৪০ সপ্তাহ পর সন্তানের জন্ম হয়। এদিক দিয়ে হিসাব করলে কার্টিসের জন্ম হয়েছে সময়ের ১৯ সপ্তাহ আগেই। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বলছে, তাদের জানামতে, সময়ের এত আগে আর কোনো শিশু জন্ম নেওয়ার পর বেঁচে থাকেনি।
গত বছরের ৪ জুলাই মিশেল বাটলার হাসপাতালে যমজ সন্তানের জন্ম দেন। কার্টিস বেঁচে যায়। তবে তার সঙ্গে জন্ম নেওয়া আরেকজন বাঁচেনি। সাধারণত সময়ের এত আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
তবে কার্টিসের ভাগ্য ছিল সুপ্রসন্ন। জন্মের পরপরই তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে নেওয়া হয়। টানা তিন মাস রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। কীভাবে শ্বাস নিতে হয় এবং মুখ দিয়ে খেতে হয়, শেখানো হয়েছিল তাকে। হাসপাতালে দীর্ঘ ২৭৫ দিন কাটানোর পর চলতি বছরের এপ্রিলে ঘরে ফেরে কার্টিস।
কার্টিসের আরও তিন ভাইবোন রয়েছে। বয়সে তারা সবাই বড়। তাদের মা মিশেল বলেন, ‘কার্টিসকে বাড়িতে নেওয়া এবং আমার অন্য সন্তানদের অবাক করে দেওয়ার মুহূর্তটি আমার সারা জীবন মনে থাকবে।’
কার্টিসকে এখনো আলাদাভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়। খাবার খাওয়াতে প্রয়োজন পড়ে নলের। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, তার স্বাস্থ্য ভালো আছে।
কার্টিস জন্ম নেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক ব্রিয়ান সিমস। তিনি ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার একজন শিশু বিশেষজ্ঞ। সিমস বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর ধরে এই কাজ করছি। এত কম সময়ে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুকে কার্টিসের মতো শক্ত থাকতে দেখিনি। তার মধ্যে বিশেষ কিছু ছিল।’
কার্টিসের আগে সবচেয়ে কম সময় গর্ভে থাকার পর জন্ম নেওয়া শিশুর রেকর্ড ছিল যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিসের রিচার্ড হাচিনসনের। তার জন্ম হয় মাত্র ২১ সপ্তাহ দুই দিনের মাথায়।