মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেট দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন
ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে কে বেশি শারীরিকভাবে ভালো অবস্থানে আছেন—এ নিয়ে নাগরিকদের কোনো প্রকাশ্য বিতর্ক নেই। বিতর্ক আছে প্রার্থীদের মধ্যে। সত্তর পেরোনো দুই নেতার নির্বাচনী লড়াইয়ে শারীরিক সক্ষমতাও চলে এসেছে প্রচার বিতর্কে। বয়সের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুজনেরই বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস গড়ার সুযোগ রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ আগে থেকেই বলে আসছেন, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন শারীরিকভাবে সক্ষমতা হারিয়েছেন। বাইডেনকে ‘স্লিপি জো’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বাইডেন নিজেই জানেন না কখন কী বলছেন, কী করছেন।

এদিক থেকে জো বাইডেনও কম যান না। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে তিনি ট্রাম্পের চেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশি সক্ষম দাবি করেছেন। বাইডেন জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তাকিয়ে দেখুন কে বেশি সক্ষম?

ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন শারীরিকভাবে সক্ষমতা হারিয়েছেন। বাইডেন নিজেই জানেন না কখন কী বলছেন, কী করছেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
নেভাদা অঙ্গরাজ্যের লাসভেগাসে নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: রয়টার্স

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের তুলনা করা হলে বাইডেন বলেছেন, ভালো করে তাকিয়ে দেখুন শারীরিকভাবে কে বেশি সক্ষম? কে বেশি নড়াচড়া করতে পারবে বলে মনে হয়?

বাইডেনকে স্লিপি জো বলে থাকেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ নিয়ে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হলে বাইডেন বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দেন। বাইডেন তাঁর স্বাস্থ্যগত তথ্য যেকোনো সময় প্রকাশ করতে রাজি আছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে দেখুন এবং নিজেই বলুন কথাটি। জনগণকে আমি বিভ্রান্ত করছি কিনা, জনগণই বলুক। আমি নিজের শারীরিক তথ্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে কখনো পিছপা হব না।’

জো বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর প্রচার শিবির আক্রমণ চালিয়ে আসছে। বয়সের ভারে কাবু হওয়া মানুষ হিসেবে তাঁকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ কারণেই প্রচারের শুরুতে নিজের ঘরের বেসমেন্ট থেকে প্রচার চালাচ্ছেন বলে ট্রাম্প বেশ কয়েক দফা আক্রমণ করেছেন।

যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে আগে থেকেই বেশ কিছু লোক বলে আসছেন। দ্য নিউইয়র্কার নামের একটি সাময়িকী প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে গত জুলাই মাসে লিখেছে, ট্রাম্পের মানসিক স্বাস্থ্য আমেরিকার জন্য অগ্নিপরীক্ষা।

ভালো করে তাকিয়ে দেখুন শারীরিকভাবে কে বেশি সক্ষম? কে বেশি নড়াচড়া করতে পারবে বলে মনে হয়?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে জো বাইডেন
জো বাইডেন
ছবি: রয়টার্স

ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন অবশ্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সরাসরি কোনো আক্রমণ করেননি। এবিসি টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন তাঁর সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে নিয়ে বসেছিলেন।

জো বাইডেন স্বীকার করেন, যেকোনো মানুষের ৭০ বছর পেরিয়ে গেলে তাঁকে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন রাখাটা বেশ স্বাভাবিক। তাঁকে প্রশ্ন করাই যায়, তিনি শারীরিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য সক্ষম বা প্রস্তুত কিনা? এমন প্রশ্নকে স্বাভাবিক উল্লেখ করে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা চমৎকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

৭৭ বছর পেরিয়ে যাওয়া জো বাইডেন নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর অভিষেক ঘটবে। দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে বাইডেনের বয়স ৭৮ পূর্ণ হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স হবে ৭৪ বছর।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ন্যূনতম বয়স ৩৫ বছর।

ডোনাল্ড ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ক্ষমতা গ্রহণের দিন তাঁর বয়স ছিল ৭০ বছর ২২০ দিন

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ক্ষমতা গ্রহণের দিন তাঁর বয়স ছিল ৭০ বছর ২২০ দিন। দেশটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে জন এফ কেনেডি ৪৩ বছর ২৩৬ দিনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।