বিপর্যস্ত পরিচয়
মেয়েটির ভালোবাসার মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে, সে গর্ভবতী হয়ে যায়। গর্ভপাত করতে গেলে আর করা হয় না বেশি দেরি হয়েছে বলে। তখন বয়স ছিল ১৪/১৫ বছর। মাঝখানে সে শিক্ষিত হয়ে ডাক্তার হয়। বিবাহিত এখন, সুখের জীবন। কিন্তু একজন কিশোরীর গর্ভপাতের জন্য তার কাছে এলে, হঠাৎ তার ফেলে আশা অতীত চলে আসে সামনে। সে পাগলের মতো খোঁজ করতে থাকে তার সেই সন্তানকে। সে কি করে ফিরে পাবে? আর যদি পায়, তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিজ পরিবারে কেমন করে অ্যাডজাস্ট করবে। ডাক্তার হয়েও তাকে কত সমস্যা প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সন্তানদের গঞ্জনা, নাকি স্বামীর তিরস্কার অথবা শ্বশুরবাড়ির মুখ ফিরিয়ে নেওয়া।
নাম তার প্রিয়তি। কোন ক্লাসে কখনো দ্বিতীয় হয়নি, খুবই বুদ্ধিমতী। তবে জেদিও কিছুটা। বাবা ব্যবসা করেন আর মা বাচ্চাদের সঠিক পড়াশোনার জন্য দিন–রাত কোচিংয়ে দৌড়ান। মা আদর করে প্রিয়তিকে প্রিতু বলে ডাকেন।
প্রিতুরা দুই বোন এক ভাই, ভাইটি সবার বড়। প্রিতুরা মতিঝিল কলোনিতে থাকে। সেখানে বিকেল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত পাড়ার ছেলেদের আনাগোনা, জোরে গান শোনা অথবা আড্ডা দেওয়া কলোনির ছেলেদের নিত্য অভ্যাস। প্রিতুর এক বান্ধবীর ভাইয়ের নাম অভয়, সে প্রিতুকে ভালোবাসত। ওরা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই ভালোবাসে দুজন দুজনকে। অভয়ের বাবা–মা গ্রামের বাড়ি গেলে অভয় আর ওর ফুপি থাকে এই বাসায়। এই সুযোগে প্রিতু আর অভয় অবাধে মেলামেশা করতে থাকে। কিন্তু বেশি দিন টিকেনি সে সম্পর্ক। একদিন প্রিতুর মা বুঝতে পারেন তার লুকোচুরি। তাই ওকে অনেক বুঝেশুনে চলতে হয়। কিন্তু ভাগ্যের ছিল ভিন্ন যাত্রা, মা ধরে ফেলেন তার মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা। কালবিলম্ব না করেই গর্ভপাত করাতে যান, অনেক হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে যখন জানতে পারেন, এতে প্রিতুর জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে, তাই বাচ্চাটির প্রসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। শহরে মানুষের জানাজানি হওয়ার ভয়ে ওদের ড্রাইভারের গ্রামের বাড়ি গিয়ে ওখানকার হাসপাতালের নার্স বাসায় এনে বাচ্চাটা প্রসব করানো হয়। মোটা অঙ্কের অর্থ পেয়ে নার্স বাচ্চাসহ চলে যায়। আর এদিকে হঠাৎ করেই বাবা ওপি–ওয়ান ভিসা পাওয়ায় সপরিবারে চলে আসে আমেরিকায়।
এখানে প্রিয়তি নাইন গ্রেড থেকে পড়াশোনা শুরু করে। এখানে যান্ত্রিক জীবনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একদিন সে ডাক্তারি পাস করে। এর দুই বছর আগে ডাক্তারি পাস করা এক ছেলের সঙ্গে ওর বিয়ে হয়। প্রিতু অনেক সুখী তার পারিবারিক জীবনে। তার এক মেয়ে ও এক ছেলে, এদের সঠিকভাবেই মানুষ করছে স্বামী/স্ত্রী মিলে। মেয়েটা বড়, সে লেখাপড়ায় মায়ের মতন। টুয়েল্ভ গ্রেডে যায় আর ছেলেটা হাইস্কুলে যায়। আজ সকালে নাশতা করার সময় ছিল না প্রিতুর, তাই সে এক কাপ কফি নিয়ে সোজা হাসপাতালে চলে আসে। খুব সকাল থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে, আকাশটা ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। এ রকম আবহাওয়াতেও রোগীর অভাব নেই, লাঞ্চ ব্রেকের সময় কখন চলে গেছে খবরও নেই। না আর খালি পেটে থাকা যায় না, লাঞ্চে টুনা স্যান্ডুইচে কামড় দিতে দিতে খোলা দরজাটি বন্ধ করতে উঠছিল, এ সময় শুনতে পেল একজন স্প্যানিশ মহিলা হাতে কিছু রিপোর্ট নিয়ে নার্সকে অনুরোধ করছে, যেন তাকেই নেক্সট পাঠানো হয় জরুরিভাবে। সে আর খেতে পারল না, তাই ডেকে পাঠাল ওদের। ঢুকেই দরজা চাপিয়ে বসল, মা বলতে শুরু করল, মেয়েটা মাত্র এইট গ্রেডে, এর মধ্যেই সে গর্ভবতী।
মেয়েটির মা বলছিল, সে ছেলেটাও একই স্কুলের। তাই ভুল করেই হয়ে গেছে, মেয়েটি মাকে থামিয়ে বলতে শুরু করল, সে ভুল করেছে, কিন্তু এখন সে বাচ্চা চায় না। সে লেখাপড়া করতে চায় বলেই কাঁদতে থাকল। আর অন্য কোন কারণ? সে ঝটপট উত্তর দিল, কারণ ছেলেটা এখন অন্য কোন মেয়েকে ভালোবাসে। সে আমার সঙ্গে খেলেছে, কেন আমি তার জন্য সময় নষ্ট করব।
সে শিক্ষিত হতে চায়, কিন্তু বাচ্চার জন্য সে কীভাবে সময় করবে। আর সে রেডিও নয় বাচ্চার জন্য। ভুল হয়ে গেছে প্রথম ভালোবাসায় সে বুঝে উঠতে পারেনি, তাই সে কোনোভাবেই চায় না বাচ্চাটা। এক নাগাড়ে সে বলেই চলল। আগামী তারিখ দিয়ে ওদের বিদায় করা হলো। পরবর্তী তারিখে যখন এল, মেয়েটার মধ্যে অনেক হতাশা দেখা দিল। আজ সে শুধু কাঁদছে, আমার কাছে নার্স এসে বলল।
মা আর মেয়ে দুজনই আমাকে জিজ্ঞেস করল, যদিও এখন বাচ্চার বয়স মাত্র তিন মাস, আল্ট্রাসনোগ্রামে কী বোঝা যায় ছেলে নাকি মেয়ে? বললাম মনে হচ্ছে মেয়ে। মেয়েটা শব্দ করে কাঁদতে থাকল। যখন মেয়েটাকে অন্য রুমে নিয়ে তার কাপড় পরিবর্তন করতে বলা হল, সে গেল। ওর মা বসে আছে, বেশ কিছু সময় পর হঠাৎ সে এসে আমারে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকল, আমি আমার বাচ্চাটাকে জন্ম দিতে চাই, ওর কোনো অপরাধ নেই। আমার জন্য আমার সন্তান কেন সাফার করবে। ডাক্তার আমাকে আর আমার সন্তানকে বাঁচাও। আমি তাকে আদর করে বসালাম, আর অন্য কোন চিন্তা না করার জন্য বলে কিছু ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিয়ে পরবর্তী রোগী দেখে বাসায় এলাম। বাচ্চারা ওদের ঘরে, আমি আর আমার স্বামী টিভিতে নিউজ দেখে শুতে এলাম। তাকে শুয়ে শুয়ে ওই মেয়েটির কথা বলছিলাম। সে শুনে বলল, মেয়েটি ঠিকই করেছে। আমি ঘুমিয়ে গেলাম, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে পানি খেয়ে আবার শুয়ে পড়ি। কিন্তু ঘুম আসছিল না। মেয়েটার কান্না আমাকে কেমন যেন আবেগতাড়িত করে দিল। আমি স্বপ্নের মাঝে আবিষ্কার করলাম আমার সেই কিশোরী বয়সের দিনগুলোকে। একে একে ভাবতে ভাবতে আমার সেই ফেলা আশা অতীত একদম দিনের আলোর মতো জলজল করে উঠল। মেঘের মতো ভাসিয়ে নিয়ে গেল আমার সেই ছোট্ট নবজাতক শিশুর কাছে। আমি যেন শুনতে পেলাম হঠাৎ তার আর্তনাদ। আমি জেগে উঠে বারান্দায় চেয়ারে বসলাম। আমার চোখ থেকে অঝোরে জল ঝরতেই থাকল। এ আমি কি সেই আমি? কী করে ভুলে থেকেছি এতটা বছর। সেই শিশুটি এখন কোথায় কেমন আছে? কত বড়ই বা হয়েছে। নামই বা কি? ওকি আমার মতো? কত যে প্রশ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সারা রাত। ভোরবেলা আর কাজে যেতে ইচ্ছা হল না, ও (স্বামী) শুধু জানতে চাইল আমি ভালো আছি তো? কী উত্তর দেব জানি না, একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল মনের অজান্তেই। শুধু মাথা নাড়লাম। ও কাজে চলে গেল, বাচ্চারাও বের হয়েছে নিজেদের কাজে।
এক কাপ কফি হাতে বারান্দায় এসে চেয়ারে বসলাম। ভাবছি কীভাবে আবার আমি খুঁজে পাব আমার অস্তিত্ব, কফি কাপে মুখ রাখতেই বুঝতে পারি ঠান্ডা হয়ে গেছে। অলসতার জন্য উঠে আর গরম করিনি। আমি যখন দিবা মগ্ন, হাতড়ে বেড়াচ্ছি খুঁজে পাওয়ার কোন সিঁড়ি, হঠাৎ মাথায় এল সেই ড্রাইভারের কথা। কিন্তু এখনো কি সে বেঁচে আছে? কিংবা ওকে কোথায় পাব? আর পাই যদিও, আমি কি আমার সন্তান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারব? হায় অদৃষ্ট, কেন তুমি সহজ উপায় বলে দাও না। আমার মা অনেক আগেই মারা গেছেন, তবে বাবা আছেন। আমি বাবাকেই বা জিজ্ঞেস করি কী করে...।
এত কিছু না ভেবেই এলাম সোজাসুজি বাবার কাছে। আমাকে দেখেই বাবা ভয় পেয়ে প্রশ্ন করলেন, এই অসময়ে তুমি?
কেন জানি না, বাবার দিকে তাকিয়ে আমার চোখ ছলছল করে উঠল, তোমার কি হয়েছে? সবাই ভালো আছে তো?
বাবার কথা থামিয়ে বললাম, না বাবা সব খবর ভালোই। তবে শুধু আমার মনটা ভালো নেই। সঙ্গে সঙ্গে বাবা বললেন, কিছুদিনের জন্য কোথাও গিয়ে বেড়িয়ে এসো। উত্তরে বললাম, বাবা আমি যেতে চাই, কিন্তু যার জন্য আমি চাপা কষ্টে তুষের মতো জ্বলছি তার সঠিক সন্ধান কি পাব? কে? কে সে? তুমি কার কথা বলছ? বাঁধভাঙা কান্নায় আর যেন বাঁধ মানল না। আমি একটু শান্ত হয়ে আমার সন্তানের কথা বললাম।
বাবা তো হতবাক, আমি কি আমার বর্তমানকে ভুলে গেছি?
–বাবা আমি ভুল করেছিলাম, কিন্তু আমার তো দায়িত্ব ছিল তার প্রতি। সে তো আমারও সন্তান ছিল। বাবা, তুমি আমাকে একটু সাহায্য করো বাবা।
–তোর জামাই কি জানে এতসব? সে কি তোকে অনুমতি দেবে? আর এই বয়সে এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করে সুখের ঘরে অযথা অশান্তি ডেকে আনছ তুমি। তোমার সন্তানেরাও বড় হচ্ছে, সে দিকে তোমার খেয়াল রাখা উচিত।
–আমি শুধু ওর খবরটা জানতে চাই, ও ভালো আছে, কী নাম, কেমন হয়েছে দেখতে! আমার প্রতি ওর কোন অভিযোগ আছে কিনা? আমি এক নিশ্বাসে বলে শেষ করলাম।
–স্বামীর অনুমতি নিয়ে যা ভালো বুঝে করো।
আমি বাড়ি ফিরলাম, রাতে সবাই একসঙ্গে খাবার শেষ করে শোয়ার ঘরে এলাম।
–কি ব্যাপার কাজে যাওনি আজ? তোমার শরীর ভালো নেই?
–না ভালোই আছে, ভাবছি কী বলে শুরু করব। আমি যদি কিছুদিনের জন্য দেশে যাই, তুমি কি পারবে না ওদের নিয়ে থাকতে? মনে হলো বিশম খেলো।
–তুমি যাবে দেশে? কার কাছে? কারও কি কোন বিপদ হয়েছে? টাকা পয়সা দিয়ে দাও, এরপর আর কিছু লাগবে না। নাকি অন্য কিছু?
–ও কি তবে বাবার কাছ থেকে জেনে গেল?
যা হোক রাতে আর বিরক্ত করলাম না, সকালে কথা হবে ভেবে। খুব সকালে বাবাই কল করলেন সব কথা জানতে চাইলেন। শুধু বলেছি, বাবা তুমি আমাকে সাহস জুগিও, তবে আমার কোনো ভয় থাকবে না। এখনো বলিনি তবে বলব।
বাবা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, দেখ এই বয়সে এসে এমন কোনো ভুল করো না যে তোমাকেই পস্তাতে হয়। একটা ভুলের জন্য জীবনটা তোমার সুন্দর সাজানো গোছানো হয়েছে। কিন্তু এই ভুল যেন বুমেরাংয়ের মতো জীবনটা না তছনছ করে যায়। ভুলে যেও না, তোমার দুটি সন্তান আছে, যাদের প্রতি তোমার দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে।
কথা শেষ করে চিন্তায় পড়েছি কী করব, আর হলো না সব কথা। পার হতে চলল দ্রুত সময়, দোটানায় পরে কাজ থেকে বাসায় আসলাম।
ও বিকেলের দিকে বারান্দায় বসে ছিল। আমি এসে আমার হাতে থাকা টিকিট দেখিয়েই বলি—
–সামনের মাসে দেশে যাচ্ছি, একটু ঘুরব আর কিছু কাজও আছে।
–আমাদের না জানিয়ে দিন তারিখ সব ঠিক করে ফেলেছ? যাওয়াটা যদি তোমার নিজের হয়, তাহলে সাহায্য লাগলে জানিও।
–আমি চোখ মুছতে মুছতে বললাম, কিছু প্রশ্নের উত্তর জানার আছে, সেটা আমার একার একান্তই ব্যক্তিগত। শুধু এইটুকুই বলতে পারি হঠাৎ আমার অতীত বর্তমান হয়ে ধরা দিয়েছে, আমি ফিরব আমার বর্তমান প্রেক্ষাপটে, তবে জানি না কতটুকু কাঁদামাটি মেখে।
–ও হেসে বলল, তুমি রহস্য করে কথা বলছ, কোন বিপদ যদি হয় তা তুমি কি সামাল দিতে পারবে?
–আমার এই যুদ্ধে আমি একাই লড়ব। সে আর কিছুই বলেনি।
কাজের ফাঁকেই চেষ্টা করছি, দেশের মানুষ এমন কেউ আছে যার মাধ্যমে আমি পেয়ে যেতে পারি আমার পৌঁছে যাওয়ার সহজ পথ। দেশে বুবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিরাম বলে গেলাম আমার অব্যক্ত কথা।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বুবু বলল, আমাকে একটা সপ্তাহ সময় দে। তুই হুট করে চলে আসিস না। মনটাকে পাষাণ করে দিলাম। প্রতিদিনের অপেক্ষা নতুন কিছু শুনবার, কিন্তু পাঁচদিনের মাথায় বুবু যা বলল, নিজের কানকেও বিশ্বাস হচ্ছিল না।
বুবু বলেই চলছে, আমি আগ্রহভরে শুনেই যাচ্ছি। নাম: প্রশান্ত, ড্রাইভারের ঘরেই বেড়ে ওঠা, চঞ্চল প্রাণবন্ত ও খুবই মেধাবী ছেলে। মেট্রিকে জিপিএ–৫ পেয়ে পরবর্তীতে বুয়েটে ভর্তি হয়। সেখানেও সে খুব ভালো রেজাল্ট করছিল, যেদিন সে তার প্রিয় ভালোবাসার মানুষটিকে পেতে তার বাবার কাছে প্রস্তাব দিল, সেদিন ওর বাবা প্রশান্তর জন্ম নিয়ে অনেক অপমান করে বের করে দেয়। ওদের বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় মেয়েটি বলে, বাবার ওপর সে কিছু বলতে পারবে না। সে অপারগ। প্রশান্ত সব ছেড়ে চলে যায় ট্রেন স্টেশনে।
নিজেকে শত প্রশ্নের মাঝে যেন আর সামাল দিতে পারিনি, তাই সে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে। বলেই বুবু আমাকে শান্ত করতে অনবরত বলতে থাকেন মাথা ঠান্ডা রাখতে। আমি শুধু ফোনটা ডিসকানেক্ট করে আকাশের দিকে চেয়ে থাকি। আজ এত বছর পর আমার সব প্রশ্ন নতুন প্রশ্নের মালা হয়ে আমার গলায় ফাঁসের মতন আটকে ধরল। নিজের মুখ দেখে অনেক ঘৃণা হলো। আমি বেহিসাবি হয়ে উঠলাম নিজের প্রতি, একদিন ভর্তি হলাম আইসিইউতে। জীবন অবসানের অপেক্ষায়। হয়তো আবার দেখা হবে আমার প্রশান্তর সঙ্গে সেই প্রতীক্ষায় জীবন ছুটে চলছে।