বিমানবন্দরে ফের তল্লাশির মুখে অভিবাসীরা

উড়োজাহাজে আমেরিকাগামী যাত্রীদের চেক ইন পয়েন্টে ‘ব্যাক-গ্রাউন্ড’ যাচাইয়ে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই নীতিমালার বাস্তবায়নও শুরু করেছে আমেরিকার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এ দেশে আসা যাত্রীদের আগের মতো আবার বিমানবন্দরে ব্যাপক তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছে।
গত ২৬ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়ার পর অভিবাসীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। অবশ্য এই তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় শুধু অভিবাসীদের আলাদা করা হয়নি। তারপরও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের নতুন এই পদক্ষেপের শিকার যে অভিবাসীরাই হবেন—এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোও।
ট্রাম্প প্রশাসন থেকে দাবি করা হচ্ছে, উড়োজাহাজে যাত্রীদের সঙ্গে গোপনে বিস্ফোরক বহনের হুমকি ঠেকাতে আমেরিকার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এর আওতায় শুধু অভিবাসীরা নন, থাকবেন আমেরিকার নাগরিকেরাও। নতুন নিয়মে আমেরিকাগামী উড়োজাহাজে চড়ার আগেই চেক ইন পয়েন্ট অথবা বোর্ডিং গেটে যাত্রীদের ‘সংক্ষিপ্ত’ জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। সেখানে তাঁদের সব ধরনের ‘ব্যাক-গ্রাউন্ড’ যাচাই করা হবে। সঙ্গে থাকা মালামাল তল্লাশিতেও থাকবে কড়াকড়ি।
আমেরিকার পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসন বা টিএসএর মুখপাত্র লিসা ফার্বস্টাইন সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তার এ বিধি আমেরিকার নাগরিক, বিদেশি পর্যটক, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। আর আমেরিকায় ফ্লাইট পরিচালনা করে এমন সব এয়ারলাইনসকে নতুন এই নিয়ম মানতে হবে।
অবশ্য ইতিপূর্বে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কয়েকটি এয়ারলাইনসের যাত্রীদের বিরুদ্ধে এমন নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। বর্তমানে তা আরও সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের কুইন্সে বসবাসকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান জানান, বাংলাদেশ ঘুরে নিউইয়র্কে ফিরে আসার পথে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এর আগে কখনো দেশে যাতায়াতের সময় এত জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হয়নি। এ প্রবাসীর ধারণা, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ যাঁকে সন্দেহ করছে, তাঁকেই ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতিতে বিশেষ করে সাম্প্রতিক অভিবাসন নীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি-আমেরিকান অ্যাটর্নিরা সঠিকভাবে আইনকানুন মানা এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সব বাংলাদেশি অভিবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছে, অনেক বাংলাদেশি নানা ধরনের অভিবাসন সমস্যায় জড়িত। তাই বাড়তি ঝামেলা এড়াতে সবাইকে যথাযথভাবে আইনকানুন মেনে চলতে হবে।
অ্যাটর্নিরা বলেন, শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের যুগে নয়, আমেরিকায় ইতিপূর্বেও এই আইন বহাল ছিল। তবে আগের চেয়ে এখন আইনগুলো বাস্তবায়নে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।