যুক্তরাষ্ট্রে মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণে মৃত্যু আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের মহামারিকালে গত এক বছরে মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণে এক লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রকাশিত তথ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে। খবর বিবিসির।
সিডিসি বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মাদক সেবনে ১ লাখ ৩০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের বছর এমন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ৫৬। অর্থাৎ বছর গড়াতেই মৃত্যু বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪টি বাদে যুক্তরাষ্ট্রের বাকি সব অঙ্গরাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত্যু বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক গ্রহণের জেরে এই মৃত্যুর সংখ্যা গোলাগুলি, সড়ক দুর্ঘটনা ও ফ্লু–জাতীয় রোগবালাইয়ের জেরে মৃত্যুকে ছাড়িয়েছে। গত বছর মাদক গ্রহণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু বেড়েছে ভেরমন্ট অঙ্গরাজ্যে—৭০ শতাংশ। এরপরই পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় ৬২ শতাংশ এবং কেনটাকিতে ৫৫ শতাংশ মৃত্যু বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির সময়ে মানসিক অবস্থা সামাল দিকে অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের দিকে ঝুঁকেছেন। আবার ফেনটানিলের মতো ল্যাবরেটরিতে উৎপাদন করা মাদকের সহজলভ্যতাও এর জন্য দায়ী।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ক্যাথরিন কিস বিবিসিকে বলেন, কয়েক বছর ধরে মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। এর মধ্যেই নতুন করে ‘আগুনে ঘি ঢেলেছে’ করোনা মহামারি। তিনি জানান, সিডিসির তথ্য বলছে, বেশির ভাগ মানুষ একাকী মাদক সেবন করেন। এটি মাত্রাধিক ডোজ গ্রহণের পেছনে একটি কারণ। এ ছাড়া মাদকের অতিরিক্ত ডোজ গ্রহণ ঠেকাতে, ক্ষতি কমাতে এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে মানুষের সেবা নেওয়ার সুযোগ কমেছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে করোনাভাইরাসের মহামারি শেষ হলেও মাত্রাধিক মাদক গ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকবে বলে মনে করছেন সেরাকিউস বিশ্ববিদ্যালয়ের লার্নার সেন্টার ফর পাবলিক হেলথ প্রমোশনের পরিচালক শ্যানন মোনাট। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ সংকট ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে সামাল দিতে হবে।’