নিউইয়র্ক নগরের আসন্ন মেয়র নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী নিকোলি ম্যালিওট্যাকিস কি তাঁর ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ব্লাজিওকে পরাজিত করে বিজয়ী হতে পারবেন? এমন প্রশ্ন তাঁর কট্টর সমর্থকেরা করতেই পারেন।
এ ধরনের একটি উটকো প্রশ্নের মুখে পড়েছেন সাত বছর ধরে নিউইয়র্ক রাজ্য আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ম্যালিওট্যাকিস।
আইনসভার সদস্য হিসেবেখ্যাতি অর্জনকারী ম্যালিওট্যাকিস ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত আইনসভায় কিছু অজনপ্রিয় ও অস্বস্তিকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি সর্বনিম্ন বেতন বৃদ্ধি, পরিবার দেখাশোনার জন্য বেতনসহ ছুটি, সমকামী-বিবাহ এবং নির্বাচনে সরকারি অর্থায়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর অভিবাসন সংক্রান্ত কিছু ঘোষণা বেশ হৃদয়গ্রাহী। গত জানুয়ারিতে নিউইয়র্ক নগরকে অভিবাসীদের আশ্রয়স্থল সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে মেয়র বিল ব্লাজিওর সঙ্গে ম্যালিওট্যাকিসর বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
এ আইন গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্ভাব্য বিতাড়নে ফেডারেল সরকারের উদ্যোগকে অস্বীকার করে।
ম্যালিওট্যাকিস যুক্তি হলো, নিজেদের নাগরিকদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার না দিয়ে এ দেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের আপনারা কেন রক্ষা করতে চান?
ডেমোক্র্যাট দলীয় মেয়র বিল ডি ব্লাজিওকে পদচ্যুত করতে স্ট্যাটন আইল্যান্ডের বাসিন্দা মেয়র পদে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নিউইয়র্ক নগর মূলত ডেমোক্রেটিক পার্টির দখলে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ম্যালিওট্যাকিসর তুলনায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ব্লাজিও ৪৪ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
ম্যালিওট্যাকিসর রক্ষণশীল মনোভাব ডেমোক্র্যাটদের তাঁর দিকে মোটেই আকর্ষণ করবে না। নগরের বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র দানের উদ্যোগের বিরুদ্ধেও ম্যালিওট্যাকিস মামলা ঠুকেছিলেন। বিতাড়িত হতে পারেন এমন ব্যক্তিদের সব ধরনের প্রামাণ্য কাগজপত্র নষ্ট করার কর্মকর্তাদের উদ্যোগকে প্রতিহত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
ম্যালিওট্যাকিস এ বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন যা অবৈধ অভিবাসীদের রাজ্যের আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
২০১৪ সনে ম্যালিওট্যাকিস আইন সভায় বক্তৃতাকালে বলেছিলেন, ‘আমার পিতা গ্রিস এবং মা কিউবা থেকে এসেছেন। অভিবাসীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার তথা আমেরিকা ড্রিম অর্জনে তাদের প্রত্যাশা আমি অনুভব করি।’ স্টুডেন্ট এইড বিলকে বিপথগামী এবং অন্যায্য হিসেবে অভিহত করেন তিনি।
ইদানীং তাঁর নির্বাচনী প্রচারাভিযানে তিনি নিয়মিত তাঁর পরিবারের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সম্প্রতি কোরীয় কমিউনিটির গির্জায় তিনি তাঁর পিতামাতার অভিবাসনের কাহিনির কথা বলে তাঁর প্রতি উদার এবং ডেমোক্র্যাট ভোটারদের টানার চেষ্টা করছেন বলে মনে করা হয়। এ এলাকায় প্রায় ৪০ শতাংশের মতো ভোটার অভিবাসী।
কিন্তু তাঁর এ ধরনের কৌশল কতখানি ফলপ্রসূ হয়ে ব্লাজিওকে হটানো যাবে তা দেখার জন্য ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।