ঢাকায় সাব্বির আহমেদ নামের এক যুবকের অপমৃত্যুর ঘটনায় নিউইয়র্কে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সাব্বিরের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে এর বিচার দাবি করেন। ১০ সেপ্টেম্বর জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা প্রাঙ্গণে বিকেল ৫টার দিকে ‘জাস্টিস ফর সাব্বির আহমেদ’ লেখা পোস্টার ও ব্যানার হাতে সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা যোগ দেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে সাব্বিরের পরিবারের সদস্যসহ অন্য আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনায় ছিলেন মৃত সাব্বির আহমেদের চাচা মনজু লস্কর ও তাঁর স্ত্রী। তাঁরা জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা। মনজু লস্কর জানান, ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করা ও অভিবাসী ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার অপেক্ষায় থাকা সাব্বির আহমেদ গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মিরপুরের শাহ আলী থানার বাসিন্দা মো. তারেকের বাসা থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ৫ সেপ্টেম্বর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে মৃত সাব্বিরের দুই চাচা ঘটনাস্থলে (তারেকের বাসায়) যান এবং জানতে পারেন যে, তারেকের বোন সোনিয়া, বোনজামাই মামুন ও তাঁর মায়ের উপস্থিতিতে এবং তাঁদের প্ররোচনা, উসকানি ও সহযোগিতায় অগ্নিদগ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে।
মনজু লস্কর প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বলেন, ‘এতগুলো মানুষের সামনে কীভাবে, কোন প্ররোচনা ও সহযোগিতায় এই অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটেছে? কে বা কারা কেরোসিন এনে তাঁকে পুড়িয়ে মারতে সহযোগিতা করেছে? কোন পরিস্থিতিতে সাব্বির তারেকের বাসায় উপস্থিত হয়েছিল? কিংবা কেউ ডেকে নিয়ে তাঁকে আগুনে ঝলসে দিয়েছে কিনা, এসব বিষয়ের তদন্ত হওয়া জরুরি।’
সাব্বিরের চাচি জানান, তারেকের বোন সোনিয়ার সঙ্গে সাব্বিরের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘ দিন। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে তাঁদের বিয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানটি বিলম্বিত হচ্ছিল। তাঁরা উভয়ই একে-অন্যের বাড়িতে আশা-যাওয়া করতেন। কিন্তু এরই মধ্যে সোনিয়ার পরিবার হঠাৎ সোনিয়ার জন্য অন্য পাত্র নির্ধারণ করেন। এ মাসের ১০ তারিখেই সোনিয়ার বিয়ের দিন ধার্য হয়েছিল। বিষয়টি তাঁরা সাব্বির বা তাঁর পরিবারকে জানাননি। সাব্বিরের পরিবারের দাবি, বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে না পারায় এবং প্রতিবাদ করায় হয়তো সাব্বিরকে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ঘটা এ ঘটনা নিয়ে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে সাব্বিরের চাচা বলেন, ‘আমার ভ্রাতুষ্পুত্র সাব্বিরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার পরিবার বহু চেষ্টা করেছে মামলা করার। কিন্তু মিরপুর থানার ওসি কোনো এক কারণে এটাকে হত্যা মামলা হিসেবে নিচ্ছেন না। এটাকে অপমৃত্যু বলছেন। তাই আমরা মিডিয়ার কাছে এসেছি। আমরা মিডিয়ার সাহায্য চাইছি। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর কাছে সাব্বির হত্যার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’